প্রকৃতিপ্রিয় নৈরাশ্যবাদী কবি মুনিরা চৌধুরী। মানবতার পূজারী ও আত্মানুভূতির দ্ব্যর্থহীন কবি মুনিরা চৌধুরী। দ্বৈতবাদের সূক্ষ্ম যুক্তিবাদের ও আত্মশুদ্ধি উপলব্ধির কবি মুনিরা চৌধুরী। পুরুষের বেদীতে বসে পুরুষার্থ অর্জনের এবং দৃষ্টিভঙ্গির শুদ্ধস্বরের কবি মুনিরা চৌধুরী। এমন আরো হাজারো নামে ডাকা যায় তাকে; গুণান্বিত করা যায় শুদ্ধ বিশেষণের প্রতিকরূপে। তার ভাষার সৌখিনতায় ধ্বনিত হয় ধ্রুব সত্যের প্রতিধ্বনি। মানসিকভাবে স্থবির হয়ে গেলেও তার অন্তরাত্মার বিচরণ সর্বব্যাপী। হৃদয় বিশুষ্ক হলেও স্নিগ্ধ বায়বের কলা সঞ্চালনে বেঁচে থাকেন মা-মাটি ও প্রকৃতি আঁকড়ে। যাদের নিয়ে বেঁচে থাকা, তারা নিরন্তর দুঃখ-পীড়া-হতাশা-গ্লানি কিংবা প্রবাহমান সময়ে বিষের ধোঁয়া ছড়িয়ে দিলেও ধীর লয়ে চলতে থাকেন গন্তব্যের দিকে। কবি মুনিরা চৌধুরীর বেঁচে থাকার আকুতি যতটুকু ছিলো তারও অধিক ছিলো পাখিমানবের বাঁচিয়ে রাখার আকুতি। হৃদয়ের উপলব্ধির সীমান্ত প্রদেশ থেকে বারংবার হাড়ভাঙা শব্দমায়ায় সমাজ-রাষ্ট্র, ধর্মশাস্ত্র, শাসক-প্রশাসক কিংবা পরমাত্মার নিকট কেবলই আত্ম অধিকারের কথা বলেছেন, বলেছেন রক্তের ধমনিতে প্রবাহিত মুক্তির কথা; দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে উচ্চারণ করেছেন এই পৃথিবীর মানুষের কথা, মাটির কথা, জীবনসম্পদের কথা। উগ্রতাকে দমিয়ে দিয়ে শান্তচিত্তে বলেছেন কুয়াশায় হারিয়ে যাওয়া মুখাবয়বের কথা। সময়ের আবহে সময়ের উপরে উঠে এসে সময়কে শাসন করে মানুষের প্রতি বিনম্র চিত্তে বলেছেন…..”আমরা শীতার্ত ভূখন্ডের অধিবাসী,আমাদের বাঁচতে দাও”।