“আদর্শ হিন্দু হোটেল” বইটি সম্পর্কে কিছু কথাঃ
ইংরেজ সময়ের পটভূমিতে এ উপন্যাসে লেখক তৎকালীন ব্রাহ্মণ সমাজের একজন ‘রাঁধুনী বামুন’, হাজারি দেবশর্মার জীবনকথা সুনিপুণ ভাবে তুলে ধরেছেন।
হাজারি ঠাকুর, এক মধ্যবয়সী বাঙালি ব্রাহ্মণ, উপন্যাসটির প্রধান চরিত্র। সে রানাঘাট স্টেশনের রেল বাজারের এক ক্ষুদ্র খাবার হোটেলের রাঁধুনী, যে হোটেলের মালিক বেচু চক্রবর্তী। মাসে সে সাত টাকা বেতন পায়। হোটেলের ক্রেতারা প্রায়শই প্রতারণা করত এবং পদ্ম ঝি হোটেলের খাবার চুরি করত। হাজারি এইগুলির বিপক্ষে, তবে সে কেবল রাঁধুনী হওয়ায় তার কিছু বলার অধিকার নেই। এখানে পদ্ম ঝি (হোটেলের এক কাজের মেয়ে) তাকে প্রায়ই উপহাস ও অপমান করত। হাজারি তার নিজের হোটেল চালু করার স্বপ্ন দেখে, তবে সে জন্য তার জন্য ২০০ টাকা দরকার। কুসুম (ঘোষ) হল এক অল্পবয়সী বিধবা, যাকে হাজারি তার মেয়ে হিসাবে বিবেচনা করে। একদিন হোটেলের বাসন চুরি হয়ে যায় এবং পুলিশ হাজারিকে গ্রেপ্তার করে। এই ঘটনার পর সে হোটেলের চাকরি হারায়।
নিজের গ্রামের কুসুম ও অতসীর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে হাজারি নিজের হোটেল চালু করে। এখানে সে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কঠোর পরিশ্রম করে। মাত্র এক বছরের মধ্যে তার হোটেলটি এলাকার সর্বাধিক জনপ্রিয় হোটেলে পরিণত হয়। এই অঞ্চলের আরও দুটি হোটেল: একটি বেচু চক্রবর্তীর এবং অন্যটি যদু বন্দ্যোপাধ্যায়ের, প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। রেলওয়ে প্ল্যাটফর্মে সরকার পরিচালিত একটি হোটেল পরিচালনা করতে হাজারি রেলওয়ের টেন্ডারও পায়। উপন্যাসের শেষে হাজারি একটি বড় হোটেল পরিচালনা করার জন্য একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে এবং বোম্বাই যায়। যাওয়ার আগে, সে বেচু চক্রবর্তীকে (যার নিজস্ব হোটেলটি বন্ধ হয়ে যায়) মার্কেট এলাকার হোটেলটির পরিচালক হিসাবে নিয়োগ করে। সে পদ্মকেও একটি চাকরি দেয়, যে আগের মত তাকে আর অপমান করতনা।