কথাসাহিত্যিক বাদল মেহেদী জীবনযুদ্ধে জয়ী এক সংগ্রামী মানুষের মুখচ্ছবি। তাঁকে জীবনের প্রতিটি অধ্যায় অজেয় সংগ্রামের দুর্ভেদ্য প্রাচীর টপকে আসতে হয়েছে। লেখালেখিটাও ঠিক তেমনি। খানিকটা বয়স পেরিয়ে সাহিত্যের অঙ্গনে তাঁর পদচারণা হলেও ভালো হয়েছে, নিজেকে অনেকটা গুছিয়ে নিয়ে সাহিত্যাঙ্গনে প্রবেশ করেছেন। বর্তমানে বয়সের প্রান্তসীমায় দাঁড়িয়ে এখনও তরতাজা যুবকের মতো নিয়মিত বিরামহীন লিখে চলেছেন। তাঁর ‘রহিমা চৌধুরানী এবং অন্তরঙ্গ স্মৃতিকথা’ নিছক আত্মজৈবনিক কোন গ্রন্থ নয়। এ গ্রন্থের পরতে পরতে রয়েছে জীবনের খণ্ড খণ্ড স্মৃতিময়তার বুনন। সেই সাথে পরম মমতার হাতছানি দিয়ে আচ্ছাদিত একেকটি অধ্যায়। এখানে যেমন পারিবারিক জীবনাচার উঠে এসেছে; ঠিক তেমনি মানুষের যাপিত জীবনের অন্তর্ভেদী বেদনার স্ফূরণ উদ্ভাসিত হয়েছে। গল্পচ্ছলে আত্মজৈবনিক লেখার ভেতর দিয়ে সেই সময়কার রাজনৈতিক পেক্ষাপট, সামাজিক অবক্ষয় আর পারিবারিক দ্বন্দ্ব-সংকট যেন এক সুতোয় গ্রথিত হয়েছে। যা তিনি সুনিপুণ উপস্থাপনায় আর সহজ ভঙ্গিমায় তুলে ধরেছেন।
একজন মহিলার রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় পারিবারিক সংকটকে ছাপিয়ে নিজেকে কীভাবে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত করেছেন তারই এক সরল বয়ান পাওয়া যাবে ‘রহিমা চৌধুরানী এবং অন্তরঙ্গ স্মৃতিকথা’ গ্রন্থে।
পাঠক নিশ্চয় হতাশ হবেন না। এটি নিছক কোনো আত্মজৈবনিক গ্রন্থ নয়। মলাট উল্টালেই জানা যাবে ইতিহাসের অমোঘ সত্য ঘটনাবলীর এক স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি।
আনোয়ার কামাল
কবি, গল্পকার, প্রাবন্ধিক ও সাহিত্য আলোচক সম্পাদক- ‘এবং মানুষ’ (সাহিত্য বিষয়ক ছোটকাগজ) ঢাকা।