এক সকাল থেকেই বৃষ্টি পড়ছে। কখনাে টিপটিপ কখনাে মুষুলধারে। তবুও পড়ছে। থামার কোনাে লক্ষণ নেই। এভাবে দুদিন বৃষ্টি চলতে থাকলে ঢাকা শহর তলিয়ে যাবে। এখনাে যে খুব ভালাে অবস্থায় আছে তা না। মােহাম্মদপুরে এখন হাঁটু সমান পানি। বিকেলের মাঝেই কোমড় সমান পানি জমতে পারে। এই বৃষ্টির মাঝে বাইরে বের হওয়ার কোনাে মানে হয় না। নেহায়েতই প্রয়ােজন না হলে কেউ বাসা থেকে বের হয় না। তবুও অনেক মানুষই বের হয়েছে। আড়ংয়ের সামনে বিরাট জ্যাম লেগে আছে। প্রায় পনেরাে মিনিট হলাে সিগন্যাল পড়ে আছে। অথচ ট্রাফিক পুলিশের কোনাে ভাবান্তর নেই। সে নিরাসক্ত ভঙ্গিতে ছাতা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। যেন এ রাস্তায় কোনাে গাড়ি নেই, কোনাে বৃষ্টি নেই।
আড়ংয়ের পাশের গলির মাথায় সামান্য জটলা বেধেছে। একটা ভ্যান ছােট এই রাস্তায় আটকে গিয়েছে। ম্যানহােল খােলা ছিল বােধহয়। ঠেলে কোনােভাবেই আগানাে বা পেছানাে যাচ্ছে না। আবির বসে বসে এই দৃশ্য দেখছে। জিনিসটায় কেমন যেন একটা একঘেয়েমি ভাব এসে গিয়েছে। এই একবার সামনে ঠেলা হচ্ছে তাে এই পেছনে; তবুও কোনাে সুরাহা মিলছে না। কোনাে কিছুতে একঘেয়েমি এসে গেলে তাতে একসময় বিরক্তি এসে পড়ে। কিন্তু আবিরের বিরক্তি লাগছে না, উত্তেজনা লাগছে। ভ্যানওয়ালা অসহায় ভঙ্গিতে ভ্যানের হ্যান্ডেল ধরে সামনে এগুনাের চেষ্টা করছে পারছে না। হঠাৎ করে লুঙ্গি মাজহারের উপস্থিতি আশেপাশের সবার মাঝে দুশ্চিন্তার ভার কমিয়ে দিল। একেক দিন একেক ডিজাইনের লুঙ্গি পড়ে বলে এলাকার সবাই তাকে লুঙ্গি মাজহার বলে ডাকে। এলাকায় সে টংয়ের দোকানদার হিসেবে সে পরিচিত।