সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামীনের জন্য এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম প্রিয় নবী ছরকারে দো’আলম হুজুর পুর নূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি। আল্লাহ পাক মানবজাতিকে “আশরাফুল মাখলুকাত” হিসেবে সৃষ্টি করে দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করেছেন। তিনি মহা মূল্যবান জ্ঞান প্রদান করে মানুষকে অন্যান্য প্রাণীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। শিক্ষাই একজন মানুষকে পূর্ণাঙ্গ মানুষে পরিণত করে। শিক্ষা হচ্ছে এমন একটি শক্তি যা মানুষের দৈহিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নে সহায়তা করে। কিন্তু এ শিক্ষা অর্জন করার জন্য নির্দিষ্ট নিয়মাবলী ও সঠিক পন্থা অবলম্বন করতে পারলেই একজন মানুষ সফলতার শীর্ষে পৌঁছতে পারে। নতুবা বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই সুনির্ধারিত নিয়ম পদ্ধতি অনুসরণ না করার ফলে বহু শিক্ষার্থীই শিক্ষার্জনের ৰেত্রে পূর্ণতায় পৌঁছতে সক্ষম হয় না এবং অনেকের জীবন বিফল হয়ে যায়। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের নিয়ম, পাঠ আরম্ভ করা, জ্ঞান অর্জনের সময়, স্মৃতি শক্তির উন্নতি করার উপায় ইত্যাদি বিষয়ে প্রায়ই অভিযোগ করতে শোনা যায়। কিন্তু বাংলা ভাষায় এ বিষয়ে লিখিত নির্ভরযোগ্য কোন বই পুস্তক নেই বললেই চলে ।
মুসলিম বিশ্বের অন্যতম বিজ্ঞ আলেম ইসলামী আইন শাস্ত্রের বিশ্ব স্বীকৃত গ্রন্থ হেদায়া প্রণেতা আল্লামা বুরহানুদ্দীন মরগীনানী (রহঃ) এর অন্যতম শিষ্য আল্লামা বুরহানুদ্দীন যর্জী (রাহঃ) তাঁর রচিত ‘তাআ’লিমুল মুতাআল্লিম তরিকুত তাআলুম’ গ্রন্থে’ ইসলামী জীবন দর্শনের আলোকে শিক্ষার্জন করার যাবতীয় উত্তম পন্থা ও নিয়মাবলী কুরআন হাদীস ও মুসলিম মনীষীদের সুচিন্তিত অভিমত সহকারে অত্যন্ত সুন্দরভাবে পেশ করেছেন। সুবিজ্ঞ লেখক বইটিকে তেরটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত করে শিক্ষার্থীদের জন্য জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় প্রায় সকল বিষয়ের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেছেন। জ্ঞান অর্জনের মর্যাদা, জ্ঞান অর্জনের সময় শিক্ষার্থীদের করণীয়, জ্ঞান দ্বারা উপকৃত হবার উপায়, স্মরণ শক্তি বৃদ্ধির উপায় ইত্যাদি নানাবিধ বিষয়ের বর্ণনা বইটিতে বিদ্যমান। তাছাড়া বইটিতে শিক্ষার্থীদের আখলাক তথা চরিত্র সংশোধনের বিষয়াদিও অত্যন্ত সুন্দরভাবে বর্ণিত হয়েছে। তবে বইটি আরবী ভাষায় রচিত হওয়ার ফলে আরবী ভাষায় পারদর্শী ব্যক্তি বর্গ ব্যতীত সাধারণ শিক্ষার্থীরা এর দ্বারা উপকৃত হওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই সকল শিক্ষার্থী ও সম্মানিত পাঠক মহলের সুবিধার কথা চিন্তা করে বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করে ‘শিক্ষার্থীদের করণীয় ও জ্ঞানার্জনের নিয়মাবলী’ নামে প্রকাশ করার প্রয়াস পাই। তাছাড়া পাঠক মহলের সুবিধার জন্য প্রতিটি পরিচ্ছেদে শিরোনামের অধীনে প্রয়োজনীয় বিস্তারিত সূচিপত্র সংযোজন করেছি।
মাদরাসা, স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীগণ এবং সর্বস্তরের জ্ঞান পিপাসু পাঠক মহল এই বই অনুসরণ করে বিশেষ উপকৃত হবেন বলে দৃঢ় আশা রাখি এবং এতে আমার শ্রম স্বার্থক হবে। আল্লাহ পাক এ শ্রমকে ইবাদত হিসাবে কবুল করুন এবং আখিরাতে নাজাতের উসিলা হিসাবে গ্রহণ করুন ।