গত শতাব্দীর শেষ ভাগে মিশরের কারাগারে ইসলামপন্থি যুবকদের ওপর চরম নির্যাতন শুরু হয়। কুরআনের বাণী প্রচার ও নবির আদর্শ অনুসরণই ছিল তাদের একমাত্র অপরাধ। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ ছিল না। . এই নির্যাতন-নিপীড়ন ইসলামি আন্দোলনের সাথে নতুনভাবে যুক্ত হওয়া যুবকদের অনেকের চিন্তায় প্রভাব ফেলে। তারা নিপীড়ক শাসকদের কাফির আখ্যা দেওয়া শুরু করে। পরে শাসকদের সাথে যুক্ত বা শাসকদের পক্ষ থেকে সুবিধাভোগীদের কাফির আখ্যা দেয় তারা। ধীরে ধীরে কাফির আখ্যা দেওয়ার পরিধি বাড়তে থাকে। শেষে যারা এই শাসকদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধে অংশগ্রহণ করেনি তাদেরও কাফির আখ্যা দেওয়া শুরু হয়। ক্রমান্বয়ে অবস্থা এমন পর্যায়ে এসে দাঁড়ায় যে, তারা ছাড়া বাকি সবাই তাদের সংজ্ঞায় কাফিরের আওতায় চলে আসছে। এভাবে জুলুমের প্রতিবাদের ইতিবাচক ও জরুরি অবস্থান থেকে তারা একসময় পতিত হয় অন্যান্য সাধারণ মুসলিমদের কাফির ঘোষণার মতো মারাত্মক নেতিবাচক ভ্রান্তিতে। . এসময় কায়রো ও সানা থেকে ড. ইউসুফ আল কারযাভীর কাছে দুটি চিঠি আসে। কাফির আখ্যাদাতা যুবকদের প্রান্তিকতা নিয়ে সুস্পষ্ট বার্তা দাবি করে তারা। আরও বিভিন্ন সুধীজন, সংগঠক ও সাধারণ মুসলিমদের পক্ষ থেকেও উসতায কারযাভীর কাছে ক্রমাগত এ বিষয়ে লেখার আবেদন জানানো হয়। . এরই পরিপ্রেক্ষিতে ড. কারযাভী এই পুস্তিকাটি লেখেন। কাফির আখ্যা দেওয়ার মূলনীতি এবং এ বিষয়ে ইমামদের মতামত সংক্ষেপে বর্ণনা করেন বইটিতে। ইনশাআল্লাহ, এই ভারসাম্যপূর্ণ আলোচনা আমাদের প্রান্তিক চিন্তার ভ্রান্তি থেকে হেফাজত করবে এবং তাকফির বিষয়ে আমাদের দেবে সঠিক ও ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গি।