মানুষের জীবন কি চক্রের মত? চক্রের কোন শুরু নেই, শেষ নেই। মানব জীবনও কি তাই? রহস্যময় চক্রের ভেতর এই জীবন ঘুরপাক খেতে থাকে? শুরু নেই, শেষ নেই। চক্র ঘুরছে।
এই চক্রের ভেতরে ঘুরপাক খেতে খেতে অপেক্ষা করে কেউ কেউ কিংবা সকলেই। কিসের অপেক্ষা?
– হুমায়ূন আহমেদ’এর অপেক্ষা হাতে নিলে এই কথাগুলোই হয়তো সর্বপ্রথম চোখে পড়বে, মলাটের ভেতর সরু অক্ষরে লেখা। সাধারণত এখানে বইয়ের ছোট্ট একটা পরিচিতি লেখা থাকে। ভেতরে কি পেতে যাচ্ছেন, কি পড়তে যাচ্ছেন তার আকার ইঙ্গিত। কিন্তু হুমায়ূন আহমেদ এখানে তেমন কিছু লিখতে চাইলেন না। রহস্যে ঘিরে রাখলেন পাঠককে। মনে প্রশ্ন জাগিয়ে দিলেন। কয়টা পৃষ্ঠা উল্টে সামনে এগোলেই চার লাইনের ছোট্ট কবিতাংশ,
ঘর খুলিয়া বাইর হইয়া
জোছনা ধরতে যাই
আমার হাত ভর্তি চাঁদের আলো
ধরতে গেলেই নাই।
লাইনগুলো দিয়ে রহস্য ধরে রাখলেন কিংবদন্তি লেখক। এখন তো সামনে এগোতেই হবে।
বইটি শুরু হয় আনন্দ দিয়ে। অমলিন আনন্দ, যেখানে কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু জীবন তো এমন নয়। জীবনে সুখ-দুঃখ উভয় যমজ ভাইয়ের মত বিরাজমান। হুমায়ূন আহমেদ’এর অপেক্ষা কারণে অকারণে সত্য কথা বলে। মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করে দেয়, আবার চোখে আঙ্গুল দিয়ে নিজের ভুলগুলো দেখিয়ে দেয়। কষ্টের সীমা লঙ্ঘন করে সুখের হাতছানি দেয়। কিন্তু সুখ দেয় না।
এই অপেক্ষাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা। আরও অসংখ্য পঁচিশ বছর যেন এভাবেই কেটে যায়।