পত্রঝরা বৃক্ষকাল মানে কি দুঃসময়? বর্ষাপেরুনো বৃক্ষরা তখন বুঝি পাতা ঝরিয়ে কাঁদে? আর হেসে ওঠে কুঁড়ির মেলা ফুটিয়ে, পত্রপল্লবে বিকশিত হতে হতে অন্য ফাগুনে?
এইসব হয়। এবং নিজস্ব দুঃখে-কষ্টে-হাসিতে-আহ্লাদে উদ্দীপিত হতে হতে মনে হতে থাকে, হয়তো এই সবই স্রেফ অমোঘ প্রকৃতি। অজস্র প্রাপ্তি এবং তার অজস্র উল্টোপিঠ দেখতে দেখতে এই যে আমাদের বেঁচে থাকা, যার বিবিধ বেলা কাটে মহামারি কি যুদ্ধ কি দুর্যোগে- তবুও থমকে দাঁড়িয়ে থাকা গেল কই? পায়ের শিরা ঠিক ঠিক চিনে নেয় পথ-সংকেত। জানা যায়, গন্তব্য-না-ভেলা মানুষের নিয়তি বিশেষ।
তবু আমাদের নিয়ত ঝরে যাওয়া, ঝরে পড়ে মরে যেতে যেতে লিখে রাখা বিবিধ রেখা-সংকেত-চিহ্নের বার্তা, সেসবও থাকে, পায়ে পায়ে ঘোরে, শোঁ শোঁ হাওয়ায় ঘূর্ণিনাচন নাচতে নাচতে জানান দেয়-ঝরাপাতায় লেখা পত্রাবলিতে কেবলি শোকবার্তা নয়, নয় কেবলি দুঃখকালের ক্রন্দনগুচ্ছ আঁকা, ঝরাপাতায় লেখা আছে আমাদের বহু নীল, বহু মেঘ, বহু ঝড়ের দিনলিপি, জীর্ণ হতে হতে যারা জানান দিয়ে যায় চিরনতুনের পূর্বাভাস।
ময়নূর রহমান বাবুল ভিন্ন ভিন্ন সময়ে কুড়িয়ে, জিঁইয়ে, জমিয়ে রেখেছেন কতিপয় পত্রাবলি, যারা লিখিত হয়েছিল ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে, নানাবিধ মেজাজ এবং আঙ্গিক এবং সময় তাই গুনগুন করে ওঠে এইসব ঝরাপাতায়, ছন্দে কিংবা অস্থির অছন্দে জানান দিতে চায় বুকবলয়ে প্রোথিত নিজস্ব পত্রাবলি।