বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস : বাংলাদেশ যুগ (১৯৪৭-২০২০) বইয়ে নব্বইয়ের দশক থেকে গত তিন দশকে লেখা বাংলাদেশের কবিতা নিয়ে কিছু আলোচনা আমি করেছিলাম। তখন বাংলাদেশের উত্তরাধুনিক কবিতা নিয়ে গবেষণাধর্মী একটি বই লেখার পরিকল্পনা করি। বাংলাদেশের উত্তরাধুনিক কবিতা : বিষয়-বিস্তার ও প্রকরণ-কলা সেই সূত্রে লেখা। এই বইয়ে উত্তরাধুনিকতা এবং উত্তরাধুনিক কবিতা বিশ্লেষণসূত্রে বাংলাদেশের উত্তরাধুনিক কবিতা বিশ্লেষণে আমি ব্রতী থাকতে চেয়েছি। আমার সাফল্য-ব্যর্থতা কতখানি বা কতটুকু সেটা বিবেচনার ভার কবিতার রসজ্ঞ, বোদ্ধা এবং সমঝদার পাঠকের ওপর ছেড়ে দিলাম। আমার দিক থেকে এটুকু বলতে পারি, চেষ্টায় কোনো কমতি আমি করিনি।
আধুনিক বাংলা কবিতা আমার আলোচ্য নয়। তাই আমার এই বইয়ে আধুনিক কবিতা নিয়ে আলোচনা নেই। বাংলাদেশের উত্তরাধুনিক কবিতার প্রাসঙ্গিকতা, পরিপ্রেক্ষিত এবং উত্তরাধুনিক কবিতার গতিপ্রকৃতি নিরূপণ করবার জন্য বাংলাদেশের আধুনিক কবিতার আলোচনা যেটুকু না-করলেই নয়Ñ সেই আলোচনাটুকুই প্রসঙ্গসূত্রে আমি করেছিÑ তার বেশি নয়। বাংলাদেশের ষাটের দশকের কবিতাতেই উত্তরাধুনিক প্রবণতার ছাপ পড়তে শুরু করেছিল, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে আমার এই বইয়ে নব্বই-পূর্ব বাংলাদেশের কবিতা বিশ্লেষিত বা মূল্যায়িত হয়নি, কেননা সেটি আমার পরিকল্পনা ছিল না। নব্বইয়ের দশক থেকে পরবর্তী তিনটি দশকের বাংলাদেশের কবিতায় উত্তরাধুনিক প্রবণতা-অনুসন্ধান আমার লেখ-পরিধি। তবে এই কাল-পরিসরে লেখা সব কবির সকল কবিতা আলোচনায় নিয়ে আসা দুঃসাধ্য ব্যাপার, তা-ও কবুল করছি।
এই বই লিখবার সময় ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ আজম, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডক্টর ফজলুল হক সৈকত, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক এর ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক জনাব ওয়াহিদ কায়সারের সঙ্গে পরামর্শ করেছি। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়, বাংলা একাডেমি, বিশ^সাহিত্য কেন্দ্র এবং বাতিঘর-এর লাইব্রেরি ও পাঠকক্ষ আমি ব্যবহার করেছি। এই সূত্রে বাংলা একাডেমির উপপরিচালক ডক্টর তপন বাগচী, বিশ^সাহিত্য কেন্দ্রের প্রকাশনা বিভাগের জনাব এস এম হযরত আলী এবং বাতিঘরের পরিচালক দীপঙ্কর দাসের কাছে আমি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করছি। এই বইয়ের অনুলিখনে আমাকে সহায়তা করেছেন স্ত্রী পুতুল তালুকদার, আমার মেয়ে রাজকন্যা অপরাজিতা লিরিক, আমার অধীনে এম.ফিল গবেষক জনাব এস. এম. হাদিউজ্জামান, আমার শিক্ষার্থী ফাহিম হাসান, মো. বদরুজ্জামান এবং বন্ধু বাইজিদ ইসলাম যুব। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস : বাংলাদেশ যুগ গ্রন্থ থেকে যে অংশটুকু এই বইয়ে প্রবেশক অধ্যায়ে পুনর্লিখিতভাবে গ্রহণ করেছি, সে অংশটি অনুলিখন করেছিলেন বন্ধু বীর আলমগীর। এঁদের প্রত্যেকের কাছে আমি কৃতজ্ঞতাজ্ঞাপন করছি। বই সংগ্রহ করে দিয়ে সহায়তা করেছেন কবি পলিয়ার ওয়াহিদ এবং কবি দিপংকর মারডুক। বইটি কম্পোজ করে দিয়ে সহায়তা করেছেন আমার অধীনে পিএইচডি গবেষক জনাব সুলতান আহমেদ, রেসিডেনশিয়াল মডেল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক জনাব তারেক আহমেদ, মো. আল-আমিন এবং বন্ধুদের মধ্যে জনাব মুরাদ চৌধুরী ও জনাব ইমদাদুল হক মিলন। এঁদের সবার কাছে আমি ঋণী। তবে, আলহাজ¦ আমিনউদ্দিন হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক সৈয়দ আকমল হোসেন পিলু এবং বন্ধু রিয়াজ মোশের্^দ-এর কাছে আমার ঋণের ক্ষেত্রে কেবল কৃতজ্ঞতাপ্রকাশই যথেষ্ট নয়।
উত্তরাধুনিক কবিতার সমঝদার পাঠকদের জন্য এই বই লেখা হয়েছে। তাঁদের কাছে এই বই সমাদ্রিত হলে আমার এই প্রয়াস সার্থকতা পাবে নতুবা সবই পন্ডশ্রম।