ইতিহাসের ঘটনা শুধু ইতিহাসের সীমাবদ্ধ থাকেনা। সেই সব ঘটনা ইতিহাসে সীমানা পেরিয়ে গভীর মানবিক উপাখ্যান এ পরিণত হয়। ‘ আগস্টের একরাত’ মানবিক উপাখ্যানের চিরায়ত গল্পকথা, যেখানে জীবন-মৃত্যুর পাশাপাশি মানুষের নৃশংসতাও ইতিহাসের পৃষ্ঠায় এক গভীর সত্য। ‘আগস্টের একরাত’ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের হত্যাকান্ডের পটভূমিতে রচিত হিউম্যান ট্রাজেডির উপ্যাখ্যান। হত্যাকাণ্ডের বিচারে ৬১ জন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছিলেন। সাক্ষীদের এইসব জবানবন্দি কাহিনীর প্রয়োজনে উপন্যাসজুড়ে ব্যবহৃত হয়েছে। লেখক একদিকে গল্প বানিয়েছেন অন্যদিকে জবানবন্দি উপস্থাপন করে ঘটনার বিবরণ সংযুক্ত করেছেন। ফলে উপন্যাসে সাধু ও চলিত ভাষা ব্যবহার অনিবার্য ছিল। নিঃসন্দেহে বলা যায় ভাষার এই দুই ধারা উপন্যাসের আঙ্গিকে ভিন্নতা এনেছে। এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্ররা মৃত। ভিন্নধর্মী আঙ্গিকের কারণে উপন্যাসের পৃষ্ঠাজুড়ে তাদের উপস্থিতি ছিল। এই উপন্যাসে সময় উথানপাথাল চরিত্র। কাহিনী নির্মাণের প্রয়োজনে সময়ের ধারাবাহিকতার আগপিছ করা হয়েছে। এই আগপিছ উপন্যাসের আঙ্গিক – বিন্যাস। শিল্পের সাধনা পাঠকের নান্দনিক বোধের তৃষ্ণা মেটায়। যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টা শিল্পের সুষমাকে প্রাণবন্ত করে। লেখকের অন্তহীন চেষ্টা সুষমার প্রথম শর্ত।