ওই যে কথায় বলে না, বড় গাছে উঁচু গাছে ঝড়ো হাওয়ার ঝাপটা ও আঘাত লাগে বেশি। বাংলা সাহিত্যের মহিরুহ রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে কথাটা বিশেষভাবে সত্য। তাকে নিয়ে তাই সমালোচনার শেষ নেই। যেমন তার জীবদ্দশায় তেমনি মরণোত্তরকালে দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পরও। এ ব্যাপারে হিন্দু-মুসলমান এককাতারে। তবে এর প্রকারভেদ, চরিত্রভেদ আছে এই যা।
এরা সবাই এক গাছের বা এক ডালের নয়। সমালোচনা বা বিরোধিতার রকমসকম ভিন্ন। সজনীকান্ত দাসের সরস তীরন্দাজির সঙ্গে সুরেশচন্দ্র, সমাজপতির রক্ষণশীল ধারার সমালোচনা যেমন ভিন্ন, তেমনি একান্ত ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক সমালোচনা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের। উদাহরণ না বাড়িয়ে বলা যায় সমকালীন মুসলমান সমাজের বড় অংশের রবীন্দ্র-বিরোধিতাও ছিল মূলত সম্প্রদায় চেতনাভিত্তিক। এর প্রায় সবটাই ছিল যুক্তিহীন রক্ষণশীলতার। ব্যতিক্রম সামান্য।
বিস্ময়কর যে রবীন্দ্রনাথের জীবৎকাল পার হয়ে এসেও শুনতে পাওয়া গেছে এমন অভিযোগ, রীতিমতো গুরুতর অভিযোগ : ‘রবীন্দ্রনাথ সাম্প্রদায়িক’, ‘রবীন্দ্রনাথ মুসলমান-বিরোধী’ ইত্যাদি। এসব অভিযোগ যে ভিত্তিহীন তা এ আলোচনায় স্পষ্ট।