ব্রিটিশরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের গায়ানা ও ত্রিনিদাদ দেড়শো বছরের অধিককাল উপনিবেশ হিসেবে শাসন করেছে। বর্ণবাদের বিভিন্ন ধরনের প্রকাশ ঘটেছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে। যারা ‘নন-হোয়াইট’ তারা যে সাদাদের চেয়ে নিম্নমানের তা স্পষ্ট করে তুলতে তারা কোন স্কুলে পড়বে, কোন ধরনের চাকরি পাবে, তাদের ওপর কোন ধরনের শাস্তি বলবৎ হবে ‘হোয়াইট মাস্টারগণ’ তা নির্ধারণ করে দিত। এই দাস্যবৃত্তি তাদের অনুকরণপ্রিয়ও করে তোলে।
ত্রিনিদদের মিগেল স্ট্রিটের সতেরোটি এপিসোডে সতেরোটি চরিত্রে একটি ম্যান-ম্যান একটা পাগল, এ কারণে সবাই তাকে এড়িয়ে চলে। কিন্তু ম্যান-ম্যান আসলেই পাগল কিনা সন্দেহ আছে। আরও অনেকের পাগলামি ম্যান-ম্যানের সর্বোচ্চ পাগলামির চেয়েও বেশি। তাকে মোটেও পাগলের মত দেখায় না। মাঝারি উচ্চতার সরুদেহের একজন মানুষ, দেখতে তেমন বাজেও নয়। পাগল যেভাবে মানুষের দিকে তাকায় ম্যান-ম্যান সেভাবে কারও দিকে কখনওই তাকায়নি। তার সঙ্গে কথা শুরু করলে এটা তো নিশ্চিত তার মুখ থেকে অত্যন্ত যুক্তিসংগত জবাবই বেরোয়। তবে এটা ঠিক তার কতগুলো অদ্ভুত অভ্যাস ছিল।
যে নির্বাচনই হোক-শহরের আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন কিংবা দেশের আইনসভার নির্বাচন, সবই তার দাঁড়ানো চাই। ভোটে দাঁড়িয়ে শহরের সব জায়গায় সে নিজেই তার পোস্টার লাগাত। খুব চমৎকার ছাপা এসব পোস্টার। পোস্টারের উপরের দিকটাতে লেখা থাকত ‘ভোট’ আর ঠিক তার নিচে ম্যান-ম্যানের ছবি। সব নির্বাচনে ম্যান-ম্যান গুনে গুনে তিনটি ভোট পেত। এই তিনটির রহস্য উদ্ধার করা যায়নি। নিজের ভোটটা ম্যান-ম্যান নিশ্চয়ই নিজেকে দিত। তাহলে বাকি দুজন কে? আন্দালিব রাশদীর পাঠক জানেন, তাঁর উপন্যাস হাতে নিলে শেষ না করে ওঠা যায় না, তার অনুবাদও তেমনই। আর ভি এস নাইপল যদি হন মূল লেখক, তা হলে তো কথাই নেই।