ফ্ল্যাপের লেখা:
গত কয়েক দশকে জীবন যত জটিলতর হয়েছে, তত্ত্ববিশ্বের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিচ্ছুরণ থেকে বাঙালিও মননের নতুন আয়ুধ সংগ্রহ করেছে। নীলশে কিয়ের্কেগার্দ-সার্ত্র-বোভোয়া-অ্যাডোর্নো-গাদামার ফুকো-বার্ত-দেরিদা-আলত্যুসের-জেমসন-একো লাকাঁ প্রমুখ চিন্তাগুরু বাঙালির মনোভুবনের দিগন্ত ক্রমাগত প্রসারিত করে চলেছেন। যেহেতু আমরা অবিভাজ্য মানববিশ্বের অধিবাসী, বিদ্যাচর্চার কোনো অর্জন, কোনো উদ্ভাসন আমাদের পক্ষে দূরবর্তী নয়। এই নিবন্ধ-সংকলন আশা করি প্রমাণ করবে, মানুষের শেষ নেই, তত্ত্বের শেষ নেই, জীবনবোধ প্রতিষ্ঠার যুদ্ধেরও শেষ নেই। সমস্তই মানব-বিত্ত, সবকিছুতেই আমাদের উত্তরাধিকার স্বতঃসিদ্ধ। নেতি ও নৈরাজ্যের বিশ্বায়ন যত উৎকট হোক, নিরন্তর নবায়মান জিজ্ঞাসাই হতে পারে আমাদের প্রতিরোধ আর বিকল্প জীবনবীক্ষার ইস্তাহার। এই বইতে তাই প্রসারিত হচ্ছে মানুষের অফুরান চিত্তসম্পদের সমৃদ্ধি। এই দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করছি যতদিন অক্ষুণ্ন থাকবে জিজ্ঞাসার পরম্পরা, আলোকযোদ্ধারা কখনও অন্ধকারের দম্ভের কাছে হার মানবে না। নিশ্চলতা ও কূপমণ্ডুকতার অভ্যাস কেটে যাবে, চোরাবালিতে তলিয়ে যাওয়ার বদলে উত্তরণের বিকল্প বেছে নিতে পারব। পড়াও যুদ্ধ – এই সত্য প্রতিষ্ঠায় হয়তো বইটি সহায়ক হবে। প্রমাণিত হোক আরো একবার : সব কিছুরই শেষ আছে, শেষ নেই শুধু মানুষের সর্বাত্মক হয়ে ওঠার।