বঙ্গবন্ধু তাঁর সমসাময়িক রাজনীতিকদের তুলনায় তো বটেই, বয়োজ্যেষ্ঠ এবং অভিজ্ঞতর রাজনৈতিক নেতাদের তুলনায়ও জনসংশ্লিষ্টতার বিচারে এগিয়ে ছিলেন বলেই মুক্তির সংগ্রামের মহানায়ক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ও সংগ্রামের অনন্য সময়োপযোগিতা ও গ্রহণযোগ্যতার পেছনে মূখ্য নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে তাঁর অর্থনৈতিক সংবেদনশীলতা। কাজেই স্বাধীনতা পূর্ব ও পরবর্তিকালে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কর্মসূচির ধারাবাহিকতাকে বলা যায় একটি বৃহদায়তন অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম। এই বইটিতে সেই অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামকে তিনটি পর্বে ভাগ করে সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যেহেতু বঙ্গবন্ধুর বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদে তাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতা, কল্যাণকামিতা ও সর্বোপরি অর্থনৈতিক ভাবনা গঠনে বিশেষ সহায়ক হয়েছে তাই প্রথম পর্বের পর্যালোচনা শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধুর বাল্যকাল থেকেই। দ্বিতীয় পর্ব হিসেবে দেখা হয়েছে ভাষা আন্দোলন পরবর্তি কালকে। বঙ্গবন্ধু এ সময় কেবল গ্রহণযোগ্যতার জোরে জাতিয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন তাই নয়। তিনি নিজেও এ সময় ইস্যুভিত্তিক আন্দোলনের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় স্বার্থ নিয়ে ভাবতে শুরু করেছেন। তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্বের ব্যাপ্তি তুলনামূলক ছোট। চার বছরের কম। কিন্তু স্বাধীন দেশের দায়িত্ব কাঁধে নিয়েই পুনর্গঠন ও উন্নয়নের যে বিশাল কর্মযজ্ঞ তিনি শুরু করেছিলেন, ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার যে রূপরেখা তিনি সে সময় দাঁড় করিয়ে গেছেন- সেগুলোর বিচারে এ সময়ে তাঁর অর্থনৈতিক চিন্তা ও কর্মসূচিগুলো খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।