আমাদের একজন শাসক ছিলেন—ভৃত্যকে আপন সওয়ারিতে বসিয়ে নিজে হেঁটেছেন খালি পায়ে। আমাদের একজন মহান বিজেতা ছিলেন— ন্যায়নিষ্ঠায় যিনি অর্ধপৃথিবী শাসন করে গেছেন। আবু বকর সিদ্দিক রা.-এর পর যিনি ছিলেন সাহাবিদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। কে তিনি? তিনি হলেন দ্বিতীয় খলিফায়ে রাশিদ, আমিরুল মুমিনিন, খলিফাতুল মুসলিমিন উমর ইবনুল খাত্তাব রা.। তাঁর জীবন ইসলামের ইতিহাসে আলোকোজ্জ্বল এক অধ্যায়। মহত্ত্ব, মর্যাদা, নিষ্ঠা, জিহাদ ও আল্লাহর পথে দাওয়াতে তাঁর ভূমিকা ও অবদানের মতো এমন আলোকিত জীবন অন্য কোনো জাতি-কালে দেখা যায় না। আলোচ্য গ্রন্থে তাঁর জীবনী ও জীবনকালের বৈশিষ্ট্যাবলি দুষ্প্রাপ্য ইলমি রত্ন থেকে বিবৃত হয়েছে বিশুদ্ধ আঙ্গিকে। জাহিলি-জীবন ও ইসলামগ্রহণ থেকে শুরু করে হিজরত, কুরআনি-জীবন, রাসুলের সার্বক্ষণিক সাহচর্য এবং সিদ্দিকি খিলাফতকালে তাঁর মহান কীর্তিগুলো সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। এ ছাড়া শাসনপদ্ধতির পাশাপাশি চারিত্রিক উৎকর্ষ, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন, জ্ঞান ও জ্ঞানীদের কদর, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ এবং উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণে তাঁর ভূমিকার বিষয়টিও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। নতুন আবাদি অঞ্চলের গণপূর্তবিভাগ সংস্কার ও সংকট নিরসনকল্পে পরিকল্পনাগুলোর পাশাপাশি স্পষ্ট করা হয়েছে কীভাবে তিনি বিভিন্ন বক্তব্যের ব্যাখ্যায় গভীর দৃষ্টিপাত, বিষয়নিগূঢ়তা এবং ভালোমন্দ যাচাই করে স্পষ্টভাবে অভিমত প্রকাশ করতেন। আরবিসাহিত্য কেন উমরের কাছে চিরঋণী, সেটিও তুলে ধরা হয়েছে গ্রন্থটিতে। মোটকথা, ফারুকি জীবনের আদ্যোপান্ত উঠে এসেছে শক্তিমান লেখক আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবির এই গ্রন্থে।