‘নিদ্রার মন এবং মেজাজ সমানতালে খারাপ হতে শুরু করেছে। কারণ অফিস শেষে ঝুমুরের আসার কথা তার অফিসের নিচে। লালমাটিয়া থেকে দু’জন একত্রে নীল শাড়ি পরে রিকশা নিয়ে সিনেপ্লেক্সে যাবে। রিকশাওয়ালা হবে বৃদ্ধ। সেই রিকশাওয়ালাকে লুঙ্গি এবং একটি শার্ট উপহার দেওয়া হবে। শার্ট-লুঙ্গি কেনা হবে রিকশা থামিয়ে ধানমণ্ডি সাতাশ নম্বর থেকে। প্ল্যান মতো সকাল সকাল নীল শাড়ির ভাঁজ খুলে গায়ে জড়িয়ে অফিসে ঢুকেছে নিদ্রা। সেই সঙ্গে ঢুকেছে নিদ্রার মোবাইলে একটি এসএমএস।’ আল নাহিয়ানের উপন্যাস ‘সরি আব্রাহাম সাহেবে’র অন্যতম চরিত্র নিদ্রার অভিনব ভাবনা প্রথমেই পাঠককে চমকৃত করবে। বিষ্ময়ও জাগাবে একই সাথে। ৬৪ পৃষ্ঠার এ উপন্যাসটি নানামুখি ঘটনার টানাপড়েন নিয়ে লিখেছেন আল নাহিয়ান। যদিও লেখক ভূমিকায় বলেছেন- ‘ইদানিং কোনো কিছুতেই বিস্মিত হই না। হতে পারি না। কোন মৃত্যু সংবাদে চমকে উঠি না। কিংবা আনন্দের খবরে কুলকুল করি না। জীবনের ওপর প্রবাহমান বাস্তবতার ইস্পাত আমার উপর প্রলেপ দিয়ে দিয়েছে। সেই ইস্পাতকে গলিয়ে ছাপার অক্ষর বানিয়েছি এই উপন্যাসে।’ লেখককের এ বয়ান থেকে বোঝাই যায় যে, জীবন অভিজ্ঞতার সারৎসারে নির্মিত এই উপন্যাস। বাংলা উপন্যাসে অনেক গল্প থাকে। অনেক গল্পের একত্রিত রূপ হয়ে ওঠে উপন্যাস। খুব চিরচেনা মুখগুলো যখন শব্দ বাক্য সংলাপের আড়ালে এসে মুখ লুকায় আমাদের চিনতে দেরি হলেও আপন করে নিতে দেরি হয় না। ‘সরি আব্রাহাম সাহেব’ নামকরণের মধ্যে যেমন একটি অভিনব ব্যাপার রয়েছে তেমনি এর সামগ্রিক ঘটনার মধ্যে আছে বিষ্ময়। প্রেম, বিরহ, জীবন-জয়ের অদম্য আকাঙ্খা পাঠককে যেমন প্রলুদ্ধ করবে তেমনি উত্তেজিত করবে চরিত্রগুলো নানামুখি কর্মকাণ্ড। উপন্যাসের পাঠমুগদ্ধতা থেকেই এ কথাগুলো বলতে হলো। আশা করি পাঠকও এ উপন্যাস পাঠ থেকে বিমুখ হবেন না।