রানাঘাটের বেচু চকোত্তির হোটেলে রসুইয়ে বামনের চাকরি করে “হাজারী ঠাকুর”, তার রান্নার প্রশংসায় কাস্টমার পঞ্চমুখ থাকলেও বেচু চকোত্তি আর পদ্ম ঝি তাকে সবসময় তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেই চলে। বিশেষত তার এই সুনাম যে সূদুর কলকাতা অব্দি চলে গেছে এইটে সহ্য হয়না পদ্ম ঝিয়ের। সে সব সময় নিচু চোখেই দেখে হাজারীকে। হাজারির পরিবারের সবাই গ্রামে থাকে সে হোটেলেই রাধে হোটেলেই খায়, কিন্তু এই রানাঘাটে আছে তার এক পাতানো মেয়ে কুসুম, যে দই আর দুধ বিক্রি করে সংসার চালায়। হোটেলে ভালো ভালো খাবার রান্না হলে হাজারী ঠাকুর নিজে না খেয়ে মেয়ের জন্য নিয়ে যায়। এটা পদ্ম ঝির সহ্য হয় না,কারন সে সবসময় বেচে যাওয়া খাবারটুকু নিজেই সাবারের লোভে থাকে। হাজারীর স্বপ্ন তার নিজের একটা হোটেল থাকবে, উপরে বড় বড় করে লেখা থাকবে, হাজারীর হিন্দু হোটেল কিন্তু ৭ বছরের কর্মস্থলের মায়া কাটিয়ে উঠতে পারেনা হাজারী ঠাকুর। আবার অনেক টাকা পয়সারও প্রয়োজন কোথায় পাবে সে এত টাকা? হোটেলে থেকে রান্নার কাজ টা তো সে ভালোই পারে, সেই সঙ্গে বাজার করার নিয়ম কানুনও ভালোই রপ্ত করে নিয়েছে। এসব ভাবতে থাকে সে নদীর পাড়ে বসে আপন মনে গোধুলী লগ্নে। কিন্তু তার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়নি একসময় অতসী, কুসুমের থেকে টাকা ধার করে নিজেই খুলে ফেলে চমৎকার একটি হিন্দু হোটেল। তার হোটেল খোলার পর যদু বাড়ুয্যে কিংবা বেচু চকোত্তি কারো হোটেলই টিকতে পারেনা প্রতিযোগিতা করে৷ এভাবেই এই গল্পে বিভূতিভূষণ দেখিয়েছে সৎ থেকেও ব্যাবসা করে উন্নতি লাভের এক অপরূপ গল্পকথা।