ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা
একজন মুক্তিযোদ্ধা হবে দেশপ্রেমিক আদর্শ মানুষ। তার চিন্তা ও চেতনায় থাকবে দেশের শুভ ভাবনা। থাকবে মানুষের জন্য কাতরতা। কিন্তু দিলদার শেখের ভেতর ছিল অর্থের লিপ্সা, সম্পদের পাহাড় গড়ার অদশ্য স্পৃহা। তার চরিত্র ছিল লুটেরাদের মতো। সে ছিল মধ্যপ ও নারী আসক্ত। এই প্রজন্মের ছেলে হয়ে বাবার এসব গর্হিত কাজকে মেনে নিতে পারেনি হামিদ শেখ। বাবার জন্য যে চিত্র নিজের মনের ক্যানভাসে আঁকতো ওই চিত্রের সাথে বাবার কোন মিল নেই। দিনে দিনে তাই বাবার জন্য ঘৃণা জমে একদিন তা অগ্নিস্ফুলিঙ্গে রূপ নিয়েছে। তার মনে হয়েছে যে লোকটি ওয়ান্টেড আসামী হবার পরও পালিয়ে বেড়াচ্ছে, তাকে ধরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিজের। প্রয়োজন বাবাকে খুন করতেও তার হাত কাঁপবে না। হামিদ শেখ নিজেও একদিন করতেও বাবা হয়ে উঠে। তাই এই আনন্দের দিনে সে তার নিজের বাবার উপস্থিতি কামনা করে না। কারণ নবজাতকের ওপর চরিত্রহী একজন মুক্তিযোদ্ধার ছায়া ভালো কোন ফল বয়ে আনতে পারে না।তাই সব মিলিয়ে বাবার সাথে যে টানাপোড়েন, যে ঘৃণার স্তুপ জমেছে তা পরিষ্কার করা প্রয়োজন। সে ভাবে এসব অসৎ চরিত্র নিয়ে একজন মুক্তিযোদ্ধার এই দেশে বেঁটে থাকার কোন প্রয়োজন নেই। অপ্রয়োজনীয় ডাল-পালা ছেঁটে ফেললে গাছের কোন ক্ষতি হয় না। তেমনি দিলদার শেখের মতো একজন মুক্তিযোদ্ধাকে খুন করলেও দেশের কোন ক্ষতি হবে না। তাই লুটেরা নারীলোভী মাতাল ঘৃণ্য একজন মুক্তিযোদ্ধাকে হামিদ শেখ নিজের হাতে খুন করে। এতে তার হাত কাঁপে না, আফসোস লাগে না বরং তার দীর্ঘদিনের লালন করা প্রতিজ্ঞান সমাপ্তি ঘটে। এসব সমসাময়িক টানাপোড়েন ও রাজনৈতিক চিত্রকল্পের সমন্বয় হলো এই উপন্যাস : একটি খুন ও নবজাতক।