“অগ্নিকন্যা” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
পূর্ব বাংলার তুমুল জনপ্রিয় নেতা শেরে বাংলা পাকিস্তানের প্রস্তাবক হয়েও জিন্নাহ সাহেবের কূটকৌশলে হয়ে গেলেন ‘দুশমন। পাকিস্তান আন্দোলনের শীর্ষনেতা সােহরাওয়ার্দী সাহেবকেও দেশভাগের আগে আগেই সরিয়ে দেয়া হলাে। কপাল খুলল জিন্নাহ-লিয়াকত খাঁর প্রিয়ভাজন খাজা নাজিমুদ্দিনের উচ্চাকাঙ্খী জিন্নাহ দেশভাগের প্রাক্কালে পাকিস্তানের হিস্যা আদায়ের চেয়ে বড়লাট হওয়ার ব্যাপারেই বেশি মনােযােগী ছিলেন। এটাই পাকিস্তানের জন্য কাল হলাে। লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের প্রতিহিংসার আগুনে জ্বলল পাকিস্তান। তাতেও জিন্নাহ সাহেবের খায়েশ মিটল না। তিনি নিজে উর্দুভাষী নন। অথচ খাজা সাহেবের পরামর্শে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে মরিয়া হয়ে উঠলেন। আর তাতে ফুসে উঠল বাঙালি। রাস্তায় নামলেন শেরে বাংলা, সােহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবসহ আরাে অনেকে। রক্তের বিনিময়ে ভাষার দাবি প্রতিষ্ঠিত হলাে। কিন্তু এতে শােষণ নিপিড়ন যেন অনেকটাই বেড়ে গেলাে। চুয়ান্ন সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের বিপুল বিজয় ক্ষমতাসীন মুসলিম লীগ কিছুতেই মেনে নিতে পারল না। শুরু হলাে গােলাম মােহাম্মদ-ইস্কান্দার মির্জাদের ষড়যন্ত্র। তারাও অবশ্য দোর্দন্ড প্রতাপশালী সামরিক শাসক জেনারেল আইয়ুব খানের কাছে পরাস্ত হলেন। বন্দি হলাে রাজনীতি। কারাগারে বসে শােষিত পূর্ব পাকিস্তানের জন্য শেখ মুজিব আঁকলেন ছয়দফার ছক।