ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা
মেহেরপুর জেলার ছায়াসুনিবিড় গ্রাম বৈদ্যনাথতলা। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল ইতিহাস সামান্য এই গ্রামটির মাথায় পরিয়ে দিয়েছে মহিমান্বিত নতুন নামের অসামান্য রাজমুকুট-মুজিবনগর।এখানেই শপথগ্রহণ করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার; মুক্তিকামী প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় আত্মোপলদ্ধির অভিপ্সা।পরবর্তীকালে সেই সরকার দক্ষ হাতে দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে সাহসিকতাপূর্ণ মুক্তিযুদ্ধ পরচালনা করে ছিনিয়ে আনে বিজয়সূর্য।মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিক শপথগ্রহণ আসলে আত্মজাগরণের গান; আলো অভিসারের যাত্রা।বাংলাদেশের জন্মমুহূর্তে ধাত্রীপনার দায়িত্ব পালন করে মুজিবনগর হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের অপরিহার্য অধ্যায়। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ও গৌরবদীপ্ত ভূমিকা থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাসে মুজিবনগরেরর উপস্থিতি যৎসামান্য; ইতিহাসের পাতায় মুজিবনগর তার নায্য মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। কোনো ইতিহাসবিদই মুজিবনগরের প্রতিসুবিচার করেননি; দায়সারা আলোচনায় আটকে থেকেছে ইতিহাসের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এই অধ্যায়টি।মুজিবনগর সংলগ্ন জনপদের কৃতী-গবেষক রাজিব আহমেদ সুদীর্ঘ এক যুগের নিরলস পরিশ্রমে সেই অসাধ্য সাধন করেছেন।সকলের অনাগ্রহ, অবহেলা ও উপেক্ষার ফলে যা কিছু লোকচক্ষুর অন্তরালে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম, রাজিব আহমেদ তা সংগ্রহ করেন পরম যত্নে।এই বইটির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়টি।শ্রমসাধ্য বইটি জন্মভূমির প্রতি তাঁর দায়বোধের প্রতীক। শেকড়-সন্ধানী গবেষক রাজিব আহমেদ উদ্ধার করেছেন মুজিবনগর বিষয়ক অসংখ্য দুর্লভ প্রামাণ্য দলিল, যার সবকিছুই এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত হয়েছে।ফলে এটি হয়ে উঠেছে এযাবৎকালের মুজিবনগর বিষয়ক সবচেয়ে তথ্যনির্ভর প্রামাণ্য-গ্রন্থ।মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের ঘাটতি পূরণে বইটি নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।এটি শুধু পাঠ্য নয়, অবশ্যই সংগ্রহে রাখার মতো আকর-গ্রন্থ।
সূচিপত্র
* প্রতিরোধের প্রথম প্রহর: মেহেরপুর ,চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া
* মহাকাব্যের প্রথম পাতা: মুজিবনগর
* এক নজরে মুজিবনগর সরকার
* প্রথম সরকারি নির্দেশনা
* মুজিবনগর কমপ্লেক্স: বাঙালির তীর্থভূমি
* গৌরবের স্মৃতিবহ মুজিবনগর: অবিনাশী প্রমিথিউস
* গণমাধ্যমে বাংলাদেশের সরকারের জন্ম
* যেভাবে গড়ে উঠল স্বাধীন বাংলা সরকার
* মুজিবনগর অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য যুদ্দ তৎপরতা
* স্বাধীন যুদ্ধে বৃহত্তর কুষ্টিয়া