“আরব্য রজনীর গল্প (১ম খণ্ড)” বইটির সম্পর্কে কিছু কথাঃ
আরবি সাহিত্যের এক অনবদ্য সম্পদ আলিফ লায়লা ওয়া লায়লা, অর্থাৎ হাজার এক রজনী। উপন্যাস আকারে সাজানাে হলেও আলিফ লায়লা আসলে পরস্পরের সঙ্গে গাঁথা অসংখ্য গল্পের সঙ্কলন। ঘটনাকাল মােটামুটি ৭৬৩ থেকে ৮০৯ খ্রিস্টাব্দ। তকালীন আরব সভ্যতার একটা পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যায় এই গল্পগুলাের মাধ্যমে।
আরব দেশের বাইরে এই গল্পগুলােকে একত্র করে গ্রন্থের আকারে প্রথম পরিবেশন করেন এক ফরাসি পণ্ডিত আন্তনি গ্যালান্ড। ১৭০৪ সালে মােট ১২ খণ্ডে আলিফ লায়লার গ্যালান্ড সংস্করণ প্রকাশিত হতেই গােটা শিক্ষিত বিশ্বের মনােযােগ আকৃষ্ট হয় এই অপূর্ব ভাণ্ডারের প্রতি। ১৮০০ সালে পরিচ্ছন্ন ও বিস্তারিত আকারে নতুনভাবে প্রকাশিত হয় এ কাহিনী। তার পর ১৮৪১ সালে তারচেয়েও বিস্তারিতভাবে, আবার প্রকাশিত হয়। ইংরেজিতে কেউ নাম দিলেন অ্যারাবিয়ান নাইটস, কেউ থাউয্যান্ড অ্যান্ড ওয়ান নাইটস। ১৮৮৫-৮৬ সালে, স্যার রিচার্ড বার্টন-এর অনুবাদ করা প্রথম পূর্ণাঙ্গ ইংরেজি সংস্করণ প্রকাশিত হয়। বিভিন্ন ভাষায় আরও অনেকে অনুবাদ করেছেন এই কাহিনীসম্ভার, সেগুলাের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছে ড. জে. সি. মারসের সঙ্কলনটি।
আমাদের দেশে বাংলায় এখন পর্যন্ত আরব্য রজনীর যে কয়টি সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে, তার প্রায় সবই সংক্ষিপ্ত আকারে, ছােটদের জন্য। এই প্রথমবারের মতাে ড. মারস ও স্যার রিচার্ড বার্টন, দু জনের সঙ্কলন থেকে বাছাই করে বিস্তারিতভাবে ৪ খণ্ডে রচিত হল আরব্য রজনীর গল্প’। আলিফ লায়লা মূলত বড়দের কাহিনী। যদিও এর মধ্যেই রয়েছে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ, আলিবাবা ও চল্লিশ চোর, সিন্দবাদ নাবিক-এর কাহিনীর মতাে অসাধারণ সব কাহিনী। বাঙালি রুচি যাতে আহত না হয়, আবার আসল রচনার স্বাদও ক্ষুন্ন না হয়, সেদিকে লক্ষ রেখে, যতটা সম্ভব মার্জিত ভাষায় বইটি অনুবাদ করা হল।