সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর মুহম্মদ নুরুল হুদা। তাঁর কাব্যপ্রায়াসের কেন্দ্রে রয়েছে ব্যক্তিমানুষ, জাতিমানুষ ও বিশ্বমানুষের প্রতি সমীকৃত প্রতীতি। জাতিসত্তার কবিরূপে বহুলনন্দিত হয়েও তিনি দৈশিক ও বৈশ্বিক মানব-অস্তিত্বের নান্দনিক ভাষ্যকার। জাতিসত্তার কবি হিসাবে তিনি বৃহত্তর লোকসমাজের যাপিতজীবন, রিচ্যুয়াল ও ঐতিহ্যঅšে¦ষণার অতলান্তিক মানস সহযাত্রী। জাতিসত্তার স্বরূপ প্রকাশ করতে গিয়ে প্রাসঙ্গিক পৌরাণিক বাস্তবতাকে কবিতার উপাদান করেছেন তিনি। বলাই বাহুল্য, এক্ষেত্রে তিনি সূক্ষ্ম পরিমিতিবোধের পরিচয় দিতে সক্ষম হয়েছেন। মাটি ও মানুষের সঙ্গে রয়েছে তাঁর নিবিড় একাত্মতা। দেশ ও জাতির সমস্যা-সঙ্কট, সমসাময়িক আর্থ-সামাজিক রাজনৈতিক বাস্তবতার অগ্নিঝরা চিত্র হচ্ছে তাঁর কবিতা। কবিতার শরীরে সমাজ-বাস্তবতাকে আত্মীকরণ করতে গিয়ে মুহম্মদ নূরুল হুদা তাঁর অনুভূতির প্রগাঢ় আলিঙ্গনে নিজস্ব চিন্তাশক্তিকে সূত্রায়িত করেন শিল্পিত অভীপ্সায়। এখানেই নিহিত জাতিসত্তার কবি হিসাবে তার নান্দনিক অনন্যতা।