স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার

৳ 400.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
9847011600531
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৪৭৯
সংস্কার 1st Published, 2012
দেশ বাংলাদেশ

“স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার” বইয়ের ফ্ল্যাপের কথাঃ
জীবনের সঙ্গে বিজ্ঞানের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ । এককথায় বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের জীবন অচল। একথা আজকের দিনে যেমন সত্যি, অতীতকালেও ছিল তেমনি সমান সত্যি। তবে আজকের মতাে অতীতে বিজ্ঞান সাধনা এত সহজ ছিল না। অন্ধকারময় সেই যুগে মুসলমানরাই ছিল বিজ্ঞানের জনক। ইসলাম শুধু মানুষের জীবনে আধ্যাত্মিক বিপ্লব ঘটিয়েছিল তা নয়, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারেও অনবদ্য অবদান রেখেছে। এ সত্য আজকের প্রজন্মের অনেকেই জানে না। এ অজানাকে প্রকাশ করার দুর্নিবার আকাঙ্খা থেকে বইটি লেখা হয়েছে। এই বিবেচনায় বইটির নামকরণ যথার্থ বলে গণ্য করা যায় । বইটি সম্পর্কে কিছু কথাঃ
বিজ্ঞানের ছাত্র না হলেও বিজ্ঞান আমার প্রিয় বিষয়। বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির সঙ্গে জীবনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ায় নিজের অজান্তে বিজ্ঞান নিয়ে প্রায়ই ভাবতাম । চারদিকের সকল বাস্তবতা যেন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতাে যে, বিজ্ঞানের সঙ্গে মুসলমানদের কোনাে সম্পর্ক নেই। তখন নিজেকে খুব অসহায় মনে হতাে। প্রতি বছর নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তদের তালিকায় মুসলমানদের নাম দেখতে না পেলে মনটা আরাে ভারি হয়ে উঠতাে। তখন ভাবতাম শুরু থেকেই কি মুসলমানদের এ দুরবস্থা?
এ প্রশ্নের জবাবে তেমন কিছু জানা না থাকলেও আমার দশম শ্রেণীতে পাঠ্য সাধারণ বিজ্ঞান বইয়ের দু’একটা নাম ও বিষয় অস্পষ্টভাবে মনে পড়তাে। বিশেষ করে আল-জাবির ও আল-কেমি শব্দ দুটি বেশি মনে আসতাে। ছাত্রজীবন থেকে শুনে আসছিলাম বীজগণিত ও রসায়নের জনক মুসলমানরা। মুসলমান হিসাবে গর্ব করতে গিয়ে অনেক সময় উল্টা পাল্টা বলতে গিয়ে বলতাম, মুসলিম গণিতজ্ঞ আল-জাবির হলেন বীজগণিতের জনক। আর আরবী আল-কেমি হলাে রসায়নের উৎস। বইটি লিখতে গিয়ে আমার ভুল ভাঙ্গে। জানতে পারি আল-জাবির আদৌ কোনাে লােকের নাম নয়। আল-জাবর হলাে একটি বইয়ের নাম। এ বইয়ের নামানুসারে আমাদের অতি পরিচিত এলজাব্রা নামের উৎপত্তি হয়েছে। আল-জাবর বইটি লিখেছেন মােহাম্মদ মুসা আল-খাওয়ারিজমি। খাওয়ারিজমি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। মুসলমানদের এত মেধা থাকতে পারে তা আগে ভাবতে পারিনি। এ বইয়ে যেসব মুসলিম বিজ্ঞানীকে নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে তাদের প্রত্যেকের ব্যাপারে ছিল আমার একই অনুভূতি। যতই লেখার গভীরে প্রবেশ করেছি ততই আমার দৃষ্টি প্রসারিত হয়েছে। বইটি লিখতে গিয়ে বুঝতে পারি মধ্যযুগের আরব মুসলমানদের কাছে বিশ্ব সভ্যতা কতটা ঋণী। মধ্যযুগে কোনাে কারণে মুসলমানরা জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রতি উদাসীন থাকলে মানব সভ্যতা অন্ধকারে তলিয়ে যেতাে।
বিজ্ঞানকে আমার কাছে মনে হয়েছে একটি মশালের মতাে। প্রাচীনকালে গ্রীকরা বিজ্ঞানের এ মশাল প্রজ্বলিত করেছিল। মধ্যযুগে মুসলমানরা এ মশাল নিজেদের হাতে তুলে নেয় । মুসলমানদের স্পেন বিজয়ের মধ্য দিয়ে এ মশাল ইউরােপে স্থানান্তরিত হয়েছে। বৈজ্ঞানিক জ্ঞান স্থানান্তরে অনুবাদের ভূমিকা কতটুকু তা লিখে শেষ করা যাবে না। মুসলমানরা অনুবাদের মধ্য দিয়েই গ্রীক জ্ঞান বিজ্ঞানের সঙ্গে পরিচিত হয়। একইভাবে ইউরােপীয়রাও অনুবাদের মধ্য দিয়ে আরবদের কাছ থেকে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান শুষে নিয়েছে। মুসলমানরা শুধু প্রাচীন গ্রীক পাণ্ডুলিপি আরবীতে অনুবাদ করেছে তাই নয়, নিজেরা বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারে মৌলিক প্রতিভার প্রমাণও রেখেছে।
আমরা অনেক সময় অনির্বাচিত রাজতন্ত্রের সমালােচনা করি। কিন্তু বইটি লিখতে গিয়ে আমি দেখেছি অনির্বাচিত আব্বাসীয় খলিফা হারুনুর রশীদ এবং তার সুযােগ্য পুত্র আল-মামুনই হলেন মধ্যযুগে আরব জাহানে বিজ্ঞান সাধনার অগ্ৰপুরুষ। এ দুই মুসলিম শাসক একটি ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তােলেন। বাগদাদে বায়তুল হিকমাহ তারাই প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বায়তুল হিকমাহ প্রতিষ্ঠা করা না হলে মুসলিম ইতিহাসে স্বর্ণযুগ বলে কোনাে অধ্যায়ের সংযোজন ঘটতাে কিনা সন্দেহ। একটি লাইব্রেরি একটি জাতির ইতিহাসকে কিভাবে পাল্টে দিতে পারে বায়তুল হিকমাহ তার প্রমাণ। আমি বিশ্বাস করি, খলিফা হারুন ও মামুনের মতাে শাসকের আবির্ভাব ঘটলে এবং বায়তুল হিকমাহর মতাে শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে উঠলে প্রতিটি যুগে বিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটবে। পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষ্য দিচ্ছে যে, বিজ্ঞান হচ্ছে শক্তির মূল। জাতি হিসাবে মর্যাদার আসন লাভ করতে হলে বিজ্ঞানে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা ছাড়া সম্ভব নয়। জাতি হিসাবে মুসলমানরা যেন হারানাে আসন পুনরুদ্ধার করতে পারে এমন একটি তাগিদ থেকে আমি বইটি লিখেছি।
আমি আশা করি, আমাদের আজকের শিশু এবং আগামী প্রজন্ম বিজ্ঞান শিক্ষাকে নিজেদের জীবনের চালিকা শক্তি হিসাবে গ্রহণ করবে।
১ ফেব্রুয়ারি, ২০১২
সাহাদত হােসেন খান

প্রখ্যাত লেখক এবং সাংবাদিক সাহাদত হোসেন খান বাংলাদেশের মিডিয়াপাড়ার একজন পরিচিত মুখ। তিনি দীর্ঘকাল ধরে সাংবাদিকতা করে চলেছেন। ১৯৮৭ সালে দৈনিক দিনকাল দিয়ে সাংবাদিকতা পেশা শুরু করেন তিনি। এরপর দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক ইত্তেফাকসহ একাধিক জাতীয় পত্রিকায় কাজ করেছেন তিনি। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের বিভিন্ন পদে তিনি চারবার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে জাতীয় প্রেসক্লাব এবং বাংলা একাডেমির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। গুণী এ লেখকের জন্ম ১৯৫৬ সালের ১লা মে। নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার কাটাবাড়িয়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান তিনি। স্থানীয় স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা এবং নরসিংদী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। সাহাদত হোসেন খান এর বইয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট অধিক স্থান পায়। দীর্ঘকালের সাংবাদিকতা ক্যারিয়ার আন্তর্জাতিক বিষয়াবলীর প্রতি তাকে আকৃষ্ট করে তোলে যা তার লেখালেখিকেও প্রভাবিত করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রাজেডি, পলাশী থেকে একাত্তর, ক্রুসেড, স্বাধীনতা উত্তর ট্র্যাজেডি মুজিব থেকে জিয়া, অটোমান সাম্রাজ্যের উত্থান, স্নায়ুযুদ্ধ, এডলফ হিটলার, মু্ক্তিযুদ্ধের ১৬ জন সেক্টর কমান্ডার, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রবাহিনীর যুদ্ধাপরাধ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রাজেডি, ক্রুসেড, কাশ্মীর টু জেরুজালেম, কারবালা, প্রাচীন মিশর, ২৬৭ দিনের মুক্তিযুদ্ধ, পঞ্চাশ মুসলিম বীর, রোমান সাম্রাজ্য, রোমান থেকে বাইজান্টাইন, স্বর্ণযুগে মুসলিম বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার, মোগল সাম্রাজ্যের সোনালী অধ্যায়, আক্রান্ত মুসলিম বিশ্ব, ইসলামের দিগ্বিজয়, মোগল সাম্রাজ্যের পতন, বিশ্বের আলোড়িত বিশটি ঘটনা, অটোমান সাম্রাজ্যের পতন, ভারতের রাজনৈতিক ও সামরিক হস্তক্ষেপ, সুলতান সোলেমান, আজকের বিশ্ব রাজনীতি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্ব, পার্বত্য উপজাতিদের আদিনিবাস, কেন এলো জরুরি অবস্থা, খোলাফায়ে রাশেদীন, ক্লিওপেট্রা, সংঘাতের আবর্তে উপমহাদেশ, সমকালীন বিশ্ব রাজনীতি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ীদের যুদ্ধাপরাধ, ট্রয় থেকে ইরাক দুনিয়া কাঁপানো যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিরোধ, ইরাকে মার্কিন আগ্রাসন, দেশ বিদেশের রাজনৈতিক ঘটনা, ধর্ম সমাজ ও রাজনীতি, অটোমান সাম্রাজ্য, বিশ্ব রাজনৈতিক সংকট, নিষিদ্ধ প্রেম, পরিচয়, পাশ্চাত্যে ইসলাম ভীতি, নিষ্পাপ প্রেমের মৃত্যু, টুক্কা মুন্সীর একান্ত ঘর, বিশ শতকের সেরা বিশ, নিষ্কলঙ্ক বধূ, দেশে দেশে গণহত্যা, বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদ বিরোধী যুদ্ধের পরিণাম, বিংশ শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ রাজনীতিবিদ, অখণ্ড ভারত কায়েমের স্বপ্ন-সহ অনেক বই তিনি লিখেছেন এবং টোয়াইলাইট, দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান বই ২টি অনুবাদ করেছেন।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ