ফ্ল্যাপে লিখা কথা
বোহালিয়া গ্রামের চাষাভূষারা নানা দৈব-দুর্বিপাকে পশুপাখি বলি দিয়ে নানা বাদ্যযন্ত্র বাড়িয়ে সেবাদানের মেলা আয়োজন করে। ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে শকুনের দল। মেলার ছাতিম-তলায় বাঁশি বাজাতো সতীশ গাড়ুয়া। তার বাঁশির সুর শুনতে মনহর জলায় ভিড় করত বড় বড় মাছেরা, গাছপালায় এস বসত পাখপাখালি, আসতো জিন-পরীরাও। সতীশ গাড়ুয়া হয়ে ওঠে প্রবাদ-পুরুষ। তার মৃত্যুর পর সেই বাঁশি বাজায় মোকারম মৃধা। বাঁশির সুর নিজামকে নিয়ে যায় অন্য এক জগতে। সেখানে দেখতে পায় পৃথিবীর তাবৎ বংশীয়ালকে। আশ্চর্য শক্তিমত্তায় লেখক পৌঁছে দেন একটি বার্তা : মানুষকে এই পৃথিবীতে টিকে থাকতে হলে দরকার জীবজন্তু, পাখপাখালি ভরপুর একটি প্রাণবন্ত প্রকৃতির। আর জাতিগত বৈশিষ্ট্যের জন্য দরকার নিজস্ব সংস্কৃতির। প্রকৃতি ও সংস্কৃতি এই দুইয়ের অস্তিত্বেই মানুষ এবং জাতির অস্তিত্ব । এ দুই ক্ষতিগ্রস্থ হলে আসে দুর্যোগ । আবার জাতিগত সংকীর্ণতা ছাড়িয়ে মানুষকে সর্বমানব হয়ে উঠতে হলে দরকার সর্বসংস্কৃতির ঐক্য। বংশীয়ালে এ ক’টি বিষয়ের দিকে প্রচ্ছন্নভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে।