“তিন গোয়েন্দা ভলিউম-১/২”বইটির প্রথমের কিছু অংশ:
শেষ ডিসেম্বরের এক হিমেল সন্ধ্যা। প্যাসিও প্লেসে এসে ঢুকেছে তিন গােয়েন্দা। হেঁটে যাচ্ছে একটা পার্কের পাশ দিয়ে। এই শীতেও মৌসুমের শেষ কয়েকটা গােলাপ ফুটে আছে। পার্কের পাশে একটা আস্তরবিহীন লাল ইটের বাড়ি, সেইন্ট জুডস রেকটরি-গির্জার যাজকদের বাসভবন। রেকটরির ওপাশে ছােট্ট গির্জা, ঘষা-কাচের ভেতর দিয়ে। আলাে আসছে। ভেতরে বাজছে অর্গান, কখনও উঁচু পর্দায় কখনও একেবারে খাদে নেমে যাচ্ছে সুর। অর্গানের শব্দ ছাপিয়ে শােনাযাচ্ছে বাচ্চা ছেলেমেয়েদের গলা, তালে তালে সুর করে পবিত্র শ্লোক আওড়াচ্ছে কবিতার মত। | রেকটরি আর গির্জার পাশ দিয়ে হেঁটে এসে ছিমছাম নীরব একটা বাড়ির সামনে দাঁড়াল তিন গােয়েন্দা, একটা অ্যাপার্টমেন্ট হাউস। বাড়িটার একপাশে রাস্তার সমতলে কয়েকটা গ্যারেজ। দ্বিতল বাড়ি, প্রতিটি জানালায় পর্দা, বদ্ধ কাচের শার্সি। বাইরের জগৎ থেকে নিজেদেরকে একেবারে আলাদা করে রেখেছে যেন ভাড়াটেরা। ‘এটাই,’ বলল কিশাের পাশা, তিনশাে তেরাে নাম্বার, প্যাসিও প্লেস। এখন বাজে সাড়ে পাঁচটা। একেবারে কাঁটায় কাঁটায় ঠিক সময়ে হাজির হয়েছি। | গ্যারেজগুলাের ডানে পাথরের চওড়া সিঁড়ি, গেটের কাছে উঠে শেষ হয়েছে। সিঁড়ি বেয়ে নেমে এল খাকি রঙের জ্যাকেট পরা একটা লােক। তিন গােয়েন্দার দিকে তাকালও না, পাশ দিয়ে হেঁটে চলে গেল। | সিড়িতে পা রাখল কিশাের। উঠতে শুরু করল। ঠিক পেছনেই রয়েছে মুসা আর রবিন। হঠাৎ অস্ফুট একটা শব্দ করে উঠল মুসা। লাফিয়ে সরে গেল একপাশে। থেমে গেল কিশাের। চোখের কোণ দিয়ে দেখল, প্রায় উড়ে নিচে নেমে যাচ্ছে একটা কালাে কিছু। ‘বেড়াল, সহজ গলায় বলল রবিন। ‘প্রায় মাড়িয়ে দিয়েছিলাম! কেঁপে উঠল মুসা। দুপাশ থেকে স্কি-জ্যাকেটের দুই প্রান্ত টেনে এনে চেন তুলে দিল। কালাে বেড়াল!