ফ্ল্যাপে লিখা কথা
… সেবার বর্ষার সময়ই যেন জীবনের একটা নুতন স্বাদ পেলাম। প্যারীর কাঠবাদাম গাছগুলোতে দ্বিতীয়বারের মতো তখন বোল এসেছিল মনে আছে আপনার? তখনই আমাদের মাথাটা আবার খারাপ হয়ে গিয়েছিল। নিজেকে আবার মনে হয়েছিল মানুষ এবং সবচেয়ে খারাপ হয়েছিল আবার আমার মানুষের মতো ব্যবহার করাটা। ফলে বেআইনিভাবে প্রবেশের জন্য চারবার পুলিশের হাতে ধরা পড়া-তারপর সপ্তাহ চারেক হাজতবাস। তারপর ওরা আমাদের বর্ডার পার করে দিলে সুইসরা আবার ফেরৎ পাঠায়। ফরাসিরা আবার অন্য জায়গায় চালান দেয়। আবার গ্রেফতার হই। জীবন্ত মানুষ নিয়ে দাবাখেলা আর কি …
… এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি কেন ফিরে এসেছি। পাঁচবছর নির্বাসিত জীবনের পর সঙ্গে যা এনেছি তা হল- এক পলাতকের অভিজ্ঞতা আর সতর্কতা, বেচে থাকার তীব্র আকাঙ্খা আর তীব্র অনুভূতি। অন্য সবদিকে আমি দেউলিয়া। এখন আমি আমার নিজের দরজায় দাঁড়িয়ে আর সে কারণেই হয়তো ‘নো ম্যানস ল্যান্ড’- এ বিনিদ্র রাত্রিযাপন, এক টুকরো রুটি কিংবা ঘুমের জন্য এক চিলতে জায়গা নিয়ে জন্তু-জানোয়ারের মতো কামড়া কামড়ি, কীট-পতঙ্গের মতো অন্ধকারের জীবন …
… অতি সাধারণ দুর্ভোগগুলোই আমাকে ভোগ করতে হয়েছে। তারপর ছাড়া পেয়েছি। মন থেকে সেসব স্মৃতি মুছে গেছে, কিন্তু নিজের চোখে দেখা, অন্যের ভাগ্যে ঘটা, কানে শোনা, আকারে-ইঙ্গিতে আঁচ করতে পারা বীভৎস অবর্ননীয় অত্যাচারের দৃশ্য আর কাহিনীগুলো যেন আবার জীবন্ত হয়ে উঠতে লাগল ….