‘কুহেলিকা’ বইয়ের কিছু কথাঃ
নারী লইয়া আলোচনা চলিতেছিল।….
তরুণ কবি হারুন তাহার হরিণ-চোখ তুলিয়া কাপতে-কুজনের মত মিষ্টি করিয়া বলিল,‘ নারী কুহেলিকা!’
যে স্থানে আলোচনা চলিতেছিল, তাহা আসলে ‘মেস হইলেও, হইয়া দাঁড়াইয়াছে একটি পুরোমাত্রায় আড্ডা।
দুই তিনটি চতুষ্পায়া জুড়িয়া বসিয়া প্রায় বিশ-বাইশজন তরুণ। ইহাদের একজন— লক্ষ্মীছাড়ার মত চেহারা—একজন ইয়ারের উরু উপাধান করিয়া আর একজন ইয়ারের দুই স্কন্ধে পা তুলিয়া নির্বিকার চিত্তে সিগারেট ফুকিতেছে। এ আলোচনায় কেবল তাহারই কোন উৎসাহ দেখা যাইতেছিল না। নাম তাহার—বখতে জাহাঙ্গীর কি উহা অপেক্ষাও নসিব-বুলন্দ দারাজ গোছের একটা-কিছু। কিন্তু অব্যবহারের দরুন তাহা এখন আর কাহারও মনে নাই। তাহাকে সকলে উপেক্ষা বা আদর করিয়া উলঝলুল বলিয়া ডাকে। এ নাম কে তাহাকে প্রথম দিয়াছিল এখন আর কেহই বলিতে পারে না। এ নাম দেওয়ার গৌরবের দাবী লইয়া বহু বাগবিতণ্ডা হইয়া গিয়াছে। এখন এই নামই তাহার কায়েম হইয়া গিয়াছে। ‘উলঝলুল্’ উর্দু শব্দ, মানে এর—বিশৃঙ্খল, এলোমেলো। কবি হারুন যখন নারীকে ‘কুহেলিকা’ আখ্যা দিল, তখন কেহ হাসিল, কেহ টিপ্পনি কাটিল,—শুধু উলঝলুল কিছু বলিল না। এক টানে প্রায়…