পরার্থপরতার অর্থনীতি

৳ 350.00

লেখক
প্রকাশক
ভাষা বাংলা
সংস্কার 15th Impression, 2017
দেশ বাংলাদেশ

পরার্থপরতার অর্থনীতি- আকবর আলি খান বইয়ের ফ্ল্যাপ থেকে নেয়াঃ
বাস্তব জীবনের অর্থনৈতিক সমস্যা সম্পর্কে মূলধারার অর্থনীতির বক্তব্য তুলে ধরার লক্ষ্যে এই গ্রন্থে লেখকের পনেরটি প্রবন্ধ সন্নিবেশিত করা হয়েছে। বইটির শুরু দানখয়রাতের অর্থনীতি নিয়ে । আরও রয়েছে দুনীতির অর্থনীতি, সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি, মেরামত ও পরিচালনার অর্থনীতি, বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ও লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি সম্পর্কে মনোজ্ঞ বিশ্লেষণ । অর্থনীতির সবচেয়ে জটিল সমস্যা অর্থনৈতিক অসাম্য সম্পর্কে রয়েছে দুটি নিবন্ধ। লেখকের দৃষ্টি শুধু বর্তমানেই নিবদ্ধ নয় । ভবিষ্যতের অর্থনৈতিক প্রবণতা সম্পর্কে বিশ্লেষণ রয়েছে “আজি হতে শতবর্ষ পরে’ শীর্ষক প্রবন্ধে । অতীতের প্রসঙ্গ এসেছে দুটি নিবন্ধে: “সোনার বাংলা: অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত” এবং “ভারতীয় অর্থনীতির উত্থান ও পতন” । তিনটি মূল্যবান রচনা রয়েছে অর্থনীতিবিদদের সম্পর্কে । “অর্থনৈতিক মানুষ ও মানুষ হিসাবে অর্থনীতিবিদ” রচনায় দেখানো হয়েছে কীভাবে অর্থনীতির পূর্বানুমান এবং পক্ষপাত করেছে। একটি প্রবন্ধে অর্থনীতির দর্শনের বিবর্তন অর্থনীতিবিদ হলেন মোল্লা নসরুদ্দীন । “মোল্লা দেখিয়েছেন যে, মোল্লার গালগল্প ও কৌতুকচুটকির মধ্যেই আধুনিক অর্থনীতির অনেক মূল্যবান সূত্র লুকিয়ে রয়েছে। ইংরেজিতে একটি প্রবাদ রয়েছে, যুদ্ধ এতই গুরুত্বপূর্ণ যে তা শুধু সেনানায়কদের কাছে ছেড়ে দেওয়া যায় না। অর্থনৈতিক সমস্যাও এত জরুরি যে, এ সব সমস্যার সমাধানের জন্য শুধু অর্থনীতিবিদদের উপর নির্ভর করা বাঞ্ছনীয় নয়। আশা করা হচ্ছে যে, এই বই অর্থনীতি নামক হতাশাবাদী ও দুর্বোধ্য বিজ্ঞান সম্পর্কে বিতর্কে অংশগ্রহণের জন্য সাধারণ পাঠকদের উদ্দীপ্ত করবে ।

সূচী
পরার্থপরতার অর্থনীতি ১
“শুয়রের বাচ্চাদের” অর্থনীতি ১১
সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি ২৩
মোল্লা নসরুদ্দীনের অর্থনীতি ৩৫
বাঁচা-মিরার অর্থনীতি ৪৫
আজি হতে শতবর্ষ পরে ; অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত ৫৫
শোষণের রাজনৈতিক অর্থনীতি ৬৯
লিঙ্গ-ভিত্তিক বৈষম্যের অর্থনীতি ৮১
খোলা ম্যানহোলের রাজনৈতিক অর্থনীতি ৯৩
বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি ১০৫
শিক্ষা ও অর্থনৈতিক অসাম্য ১১৭
সোনার বাংলা : অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষিত ১২৭
“ভারতীয় অর্থনীতির” উত্থান ও পতন ১৩৯
“অর্থনৈতিক মানুষ” ও মানুষ হিসাবে অর্থনীতিবিদ ১৫১
অর্থনীতির দর্শনের সন্ধানে ১৬১
পরিভাষা কোষ
ইংরেজী থেকে বাংলা ১৭৩
বাংলা থেকে ইংরেজী ১৮৩
নির্ঘণ্ট ১৯৩

ভূমিকা
প্রায় সাতাশ বছর আগে আমি যখন ক্যানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে এম. এ. পড়তে যাই তখন আমার শিক্ষকদের কণ্ঠে গণিত বিনা কোন গীত ছিল না। তাই আমাকে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে অর্থনীতির বুলি (jargon) ও দুরধিগম্য পদ্ধতি রপ্ত করতে হয়। অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর (এম. এ) ও পিএইচ. ডি. ডিগ্ৰী শেষ করে ১৯৭৯ সালে ঘরের ছেলে ঘরে ফিরি।
গবেষণার গজদন্ত মিনার থেকে আমলাতন্ত্রের আটপৌরে জীবনে ফিরে বুঝতে পারলাম যে, আমার শিক্ষকরা যত্ন করে আমাকে অর্থনীতি শিখিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু যারা আদৌ কোন তত্ত্বের ধার ধারে না তাদের কিভাবে অর্থনীতির মন্ত্রে দীক্ষিত করতে হবে তা শেখাননি। যে কোন তত্ত্বের সার্থকতা তার প্রয়োগে। অথচ বাস্তব জীবনে যারা অর্থনীতি সম্পর্কে বড় বড় সিদ্ধান্ত নেন তারা অনেক ক্ষেত্রে আদৌ অর্থনীতি জানেন না। তাই অর্থনীতিবিদদের সবচেয়ে কঠিন দায়িত্ব হল অর্থনীতির ভাগ্যবিধাতাদের কাছে সঠিক সমাধান তুলে ধরা। কিন্তু অর্থনীতির দুজ্ঞেয় তত্ত্ব ও দুর্বোধ্য পদ্ধতি রাজনীতিবিদ ও প্রশাসকদের মধ্যে প্রবল অনীহা সৃষ্টি করে। ফলে বেশিরভাগ অর্থনীতিবিদের অবস্থা রবীন্দ্রনাথের “বিদায় অভিশাপ” কবিতার অভিশপ্ত কচের মত; তারা যা শিখেছেন তা প্রয়োগ করতে পারেন না। একবার এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে তার একটি প্রিয় প্রকল্পের দুর্বলতা বোঝাতে গিয়ে “opportunity cost” (বিকল্পের নিরিখে ব্যয়) সম্পর্কে কিছু বক্তব্য পেশের চেষ্টা করেছিলাম। কর্মকর্তটি রেগে বললেন যে, “opportunism” (সুবিধাবাদ) তিনি মোটেও পছন্দ করেন না। উর্ধতন কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে যা ঘটেছে, নীচের ও একই পর্যায়ের কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও একই অভিজ্ঞতা। সহকমীদের পরিমাণগত বিশ্লেষণ ও লেখচিত্ৰ বােঝাতে গিয়ে ঔদাসীন্যের দুর্ভেদ্য প্রাচীরে বার বার হােঁচটি খেয়েছি।
শিক্ষকরা আমাকে যা শেখাননি, অভিজ্ঞতা থেকে আমাকে তা তিলে তিলে শিখতে হয়েছে। সরকারী দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দেখলাম যে, যা সহজভাবে বোঝানো যায় না তা কোন দিনই বোঝানো হয়ে ওঠে না। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানেঅর্থনীতি পড়াতে গিয়ে আমার নিজের অজান্তেই অর্থনীতি সম্পর্কে বক্তব্য উপস্থাপনের একটি নিজস্ব ভঙ্গি গড়ে ওঠে। অভিজ্ঞতা হতে দেখতে পেলাম যে, গণিতের বিভীষিকা৷ ও লেখাচিত্রের কণ্টক এড়িয়ে রম্যরচনার অবয়বে অর্থনীতির অপ্ৰিয় বক্তব্য অধিকতর গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। তবে অতি সরল করতে গেলে বক্তব্য অনেক সময় বিকৃত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। এ পরিস্থিতিতে অর্থনীতির গুরুগম্ভীর বক্তব্যের সাথে রম্যরচনার হালকা ও চটুল ভঙ্গি মেলানো সব সময়ে সহজ হয় না। কিন্তু যেখানে যথাযথ বক্তব্য আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করা সম্ভব সেখানেই বক্তা ও শ্রোতার মধ্যে ভাবের সুষ্ঠু আদান প্ৰদান ঘটে। তাই যারা গুরুগম্ভীর অর্থনীতিতে ঠাট্টা-মশকরাকে সন্দেহের চোখে দেখেন আমি তাদের সাথে একমত নই। অধ্যাপক পল ক্রুগম্যান (Paul Krugman) তাঁর “Accidental Theorist” 3.8 tria ficrC2r, “You cannot do serious economics unless you are willing to be playful” (IS$9IC fostill অর্থনীতির চর্চা করতে হলে আপনাকে কৌতুকপরায়ণ হতে হবে)। আমি তাই মনে করি যে, হালকা ও চটুল ভঙ্গি অর্থনীতির বক্তব্যকে লঘু করে দেয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে গভীরতর দ্যোতনা দেয়। যারা আমার বলার ভঙ্গি নিয়ে কৌতুকবোধ করবেন। তাদের অতি বিনয়ের সাথে সারণ করিয়ে দিতে চাই যে, এই বই ভিন্ন স্বাদের হলেও অবশ্যই অর্থনীতির মূলধারার প্রতি অনুগত।
কবির ভাষায় বলতে গেলে, “আমারে পাছে সহজে বোঝ। তাইতো এত লীলার ছিল;
বাহিরে যার হাসির ছটা, ভিতরে তার চােখের জল।”
এ গ্রন্থে সংকলিত কোন কোন রচনার পেছনে ইতিহাস রয়েছে। ১৯৭৪ সালে ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কে আমার একটি প্ৰবন্ধ পড়ে আমার শিক্ষক ও প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী স্কট গর্ডন এ সম্পর্কে একটি গবেষণামূলক প্ৰবন্ধ প্রকাশের জন্য উপদেশ দেন। গত পঁচিশ বছরে তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে পারিনি। এ গ্রন্থে একটি রচনায় এ সম্পর্কে কিছু বক্তব্য তুলে ধরেছি। “সোনার বাংলা” সম্পর্কে আমার বক্তব্য বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্ৰশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীদের কাছে প্রথম পেশ করেছিলাম। পরবর্তীকালে আমার আনুষ্ঠানিক বক্তব্য ডক্টর সিরাজুল ইসলাম সম্পাদিত ও এশিয়াটিক সোসাইটি অব বাংলাদেশ কর্তৃক প্রকাশিত History of Bangladesh-এর দ্বিতীয় খণ্ডে প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থে রম্যরচনার আকারে একই বক্তব্য আবার তুলে ধরেছি। বিশ্বের বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে ১৯৮৭ সালে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচী কর্তৃক আয়ােজিত নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের জন্য একটি প্ৰবন্ধ রচনা করি। প্ৰবন্ধটি সংক্ষিপ্ত আকারে Natural Resource Forum নামে একটি বিদেশী জার্নালে প্ৰকাশিত হয়। এ গ্রন্থের ‘বাংলাদেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণের রাজনৈতিক অর্থনীতি”-তে পূর্ববতী প্রবন্ধের বক্তব্যের প্রতিধূনি রয়েছে। “আজি হতে শতবর্ষ পরে ; অর্থনৈতিক প্রেক্ষিত” শীর্ষক প্ৰবন্ধটি ২০০০ সালের ১লা জানুয়ারী “দৈনিক সংবাদে।” প্রকাশিত হয়। অর্থনৈতিক সংস্কার সম্পর্কে আমি ১৯৯৫ সালে ম্যানিলাতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচী ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত একটি সেমিনারে কিছু বক্তব্য উপস্থাপন করি। এসব বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা যাবে “সংস্কারের রাজনৈতিক অর্থনীতি’ শীর্ষক নিবন্ধে। অন্যান্য প্ৰবন্ধগুলো একেবারেই নতুন এবং এর আগে কোন আকারেই উপস্থাপিত হয়নি।
এ গ্রন্থের পাঠকরা সহজেই লক্ষ্য করবেন যে, এ গ্রন্থে অনেক জায়গাতে অধ্যাপক স্কট গর্ডনের উদ্ধৃতি রয়েছে। তাঁর কাছে আমি অর্থনৈতিক চিন্তার ইতিহাস ও দর্শন পড়েছি। তাকে আজ সশ্রদ্ধচিত্তে সরণ করি। বিভিন্ন বিষয়ে গবেষণার ব্যাপারে। জনাব এ. কে. এন. আহমেদ আমাকে নানাভাবে সাহায্য করেছেন। এ গ্রন্থের “শুয়রের বাচ্চাদের অর্থনীতি” শীর্ষক নিবন্ধে উল্লেখিত মাইকেল ক্যারিটের আত্মজীবনীর অনুলিপি আমি তার কাছেই পেয়েছি। গত দশ বছর ধরে ডক্টর কামাল সিদ্দিকী এই বইটি লেখার জন্য আমাকে তাগাদা দিয়ে আসছেন। তিনিও অনেক দুষ্পপ্ৰাপ্য বই ও সাময়িকী আমাকে সংগ্রহ করে দিয়েছেন। বইটির পাণ্ডুলিপি প্রস্তুতকালে বিশেষভাবে সহায়তা করেছেন আমার দীর্ঘদিনের বন্ধু জিয়াউল আনসার। পাণ্ডুলিপিটি সংশোধনে অত্যন্ত মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন আমার বন্ধু ও সুসাহিত্যিক এ. বি. এম. আব্দুশ শাকুর এবং আমার প্রাক্তন কনিষ্ঠ সহকমী আমিনুল ইসলাম ভূইয়া। বিভিন্ন নামের উচ্চারণ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্য সচিব ডক্টর সৈয়দ আব্দুস সামাদ। এদের সকলের কাছে আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। এরা সবাই বইটির গুণগত মান বাড়াতে সহায়তা করেছেন। যা ভুলত্রুটি রইল। তার জন্য অবশ্য আমিই এককভাবে দায়ী । এই বইয়ের প্রকাশক মহিউদ্দিন আহমেদ অতি যত্বের সাথে স্বল্পতম সময়ে প্রকাশনার কাজ সম্পন্ন করেছেন। তার কাছে আমি বিশেষভাবে ঋণী। ইউপিএল-এর জনাব বদিউদ্দিন নাজির প্রকাশনা সম্পর্কে কিছু মূল্যবান পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থ বিভাগের মোঃ আতায় রাবিব বইটি নিষ্ঠার সাথে টাইপ করে দিয়েছেন। তাদেরও জানাই। ধন্যবাদ। আমার একমাত্র মেয়ে নেহরীন ও আমার স্ত্রী হামীম নিশ্চয়ই বইটি শেষ হওয়াতে মনে মনে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন । অবশ্যই এ ধরনের বই লেখতে গেলে তাদের জন্য নানা ঝামেলার সৃষ্টি হয়। তবু তাঁরা হাসি মুখে সবকিছু মেনে নিয়েছেন। তাদের মুখের হাসি চিরদিন অক্ষুন্ন থাকুক, এটাই আমার প্রার্থনা। আমার মা হাজেরা খান, আমার শাশুড়ি জাহানারা রহমান, আমার ভাই জিয়া ও কবির ও আমার বড় বোন বীনা। আপা ও রেখা। আপা এবং আনুদা ও জোহরা ভাবী সব সময়েই লেখালেখির ব্যাপারে আমাকে উৎসাহিত করেছেন। তাদেরও জানাই কতজ্ঞতা ।
২৫ শে বৈশাখ, ১৪০৭ ঢাকা

আকবর আলি খান

‘৭১ পূর্ববর্তী সময়ে তিনি সর্বদাই অন্যায়ের বিরুদ্ধে উচ্চকণ্ঠ ছিলেন, ছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসহযোগের সমর্থক। ২৫ মার্চের কালরাতের পর যখন অস্থায়ী সরকার গঠিত হয়নি, তখনই নিজ এলাকা হবিগঞ্জে পুলিশের অস্ত্র সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দিয়ে যুদ্ধ করতে অনুপ্রাণিত করেন তিনি, নিজ হাতে তৈরি করেন অস্ত্র উন্মুক্তকরণের সরকারি লিখিত অনুমতি। অস্থায়ী সরকারের জন্য তহবিল গড়তে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে তিন কোটি টাকা ট্রাকে করে আগরতলা পৌঁছে দেন। বাঙালির চেতনা ও অহংকারের মুক্তিযুদ্ধে অসম সাহসিকতার সাথে কর্তব্য পালন করা এই মানুষটির নাম আকবর আলি খান। আকবর আলি খানের জন্ম ১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে। নিজ গ্রামেই স্কুলজীবন শেষ করে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করে চাকরিজীবনে প্রবেশ করেন। মাঝে এক বছরের জন্য লাহোরের সিভিল সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এরপর এস.ডি.ও হিসেবে তার কর্মস্থল হয় হবিগঞ্জে। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয় সহ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ সরকারী কর্মকমিশন সচিবালয়ে কাজ করেন। মাঝে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স এবং পি.এইচ.ডি করে আসেন। আকবর আলি খান এর বই সমূহ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ঐতিহাসিক উত্থান নিয়ে প্রামাণ্য দলিল। এছাড়াও, আকবর আলি খানের বই বাংলাদেশের সামাজিক পরিবর্তন এবং এদেশে ইসলামের বিকাশ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণালব্ধ দলিল। এশিয়াটিক সোসাইটি থেকে প্রকাশিত তার বই ‘হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ তার সেরা রচনা। আকবর আলি খান এর বই সমগ্রতে আরো আছে ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’, ‘বাংলায় ইসলাম প্রচারে সাফল্য’, ‘বাংলাদেশের সত্তার অন্বেষা’, ‘ডিসকভারি অব বাংলাদেশ’ ইত্যাদি বই।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ