বাংলাভাষায় প্রথম অন্ত্যমিল শব্দের অভিধান (মিত্রাক্ষর)

৳ 550.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
9847010504736
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৪৬০
সংস্কার 2nd print, 2013
দেশ বাংলাদেশ

বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা
প্রচলিত বাংলা অভিধানের বাইরে মিত্রাক্ষর নতুন সংযােজন। বাংলায় মিত্রাক্ষর ছন্দ অধিক প্রচলিত হলেও অমিত্রাক্ষর কথাটি মাইকেল মধুসূদন দত্তের বদৌলতে উনবিংশ শতাব্দীর ছয়ের দশকে বেশ জনপ্রিয় হয়। তখন অমিত্রাক্ষর ছন্দকে মাইকেলি ছন্দ বলা হত। এখনাে অমিত্রাক্ষর বলতে মাইকেলের কথা মনে পড়ে। ইংরেজ কবি মিলটনের প্যারাডাইস লস্ট-এর ব্ল্যাঙ্ক ভার্স-এর বাংলা করেন ন্যাড়া ছন্দ। যে ছন্দে অন্ত্যমিল বা অন্ত্যানুপ্রাস নাই’ অর্থাৎ ছন্দের পঙক্তির শেষে অক্ষরে অক্ষরে অমিত্রতা বা অমিল তাকে অমিত্রাক্ষর ছন্দ বলা হয়। যে ছন্দে শ্লোকের দুই পঙক্তির শেষ দুই শব্দের অক্ষর একপ্রকার অর্থাৎ তাদের মধ্যে মিত্রতা বা মিল তাকে মিত্রাক্ষর ছন্দ বলে। মিত্রাক্ষর বলে আর একটি শব্দ রয়েছে যার অর্থ পরিমিতবর্ণ, স্বল্পাক্ষর বা ছন্দোবদ্ধ। বাংলাভাষার বিশাল শব্দভাণ্ডার থেকে মিত্রাক্ষর সংকলন করা এক দুঃসাধ্য কাজ। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান সেই দুরুহ দুঃসাধ্য অভিধান সম্পাদনা করলেন । যথাশব্দ-এর পর মিত্রাক্ষর তার অন্যতম গ্রন্থ। যে-কোনাে শব্দসন্ধিৎসু পাঠকের কাছে মিত্রাক্ষর সাদরে গৃহীত হবে।

বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান বাংলাদেশের একজন অন্যতম শিক্ষাবিদ, আইনজীবী ও বিচারক। ১৯২৮ সালের ৩ ডিসেম্বর ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলভী মুহাম্মদ জহির উদ্দীন ছিলেন একজন রাজনৈতিক কর্মী এবং আইনজীবী। শৈশব থেকেই রাজনৈতিক বিষয়াদি ও সংস্কৃতির দিকে তাঁর ঝোঁক ছিল। ১৯৪৭ এ দেশভাগের পর তাঁরা তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও পরবর্তীতে রাজশাহীতে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান ১৯৪৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে বি.এ. (সম্মান) এবং ১৯৫১ সালে এম.এ. পাস করেন। এরপর ১৯৫৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ইতিহাস বিষয়ে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তাঁর কর্মজীবনের শুরু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক পদে যোগ দিয়ে। এরপর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৪ সালে ঢাকা হাইকোর্ট বারে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়ের। সহকারী এডভোকেট জেনারেল, হাইকোর্টের ভাইস প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য পদে দায়িত্ব পালন করার পর ১৯৭৬ সালে তিনি হাইকোর্টের বিচারপতি হন। ১৯৮৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে যোগ দেন। ১৯৯৫ সালে তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন। ১৯৯৬ সালে ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলাকালীন তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান একাধারে একজন আইনজীবী, শিক্ষাবিদ, লেখক, গবেষক, রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ এবং অভিধানপ্রণেতা। তিনি একজন ভাষা সৈনিক; ভাষা আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এর বই সমূহ ভাষা ও সাহিত্যের প্রতি তাঁর গভীর অনুরাগেরই বহিঃপ্রকাশ। তিনি উচ্চ আদালতে বাংলা ভাষা প্রবর্তনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেন। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের বই সমূহ হলো ‘রবীন্দ্র সম্বন্ধে সঞ্জনা ও পার্থক্য বিচার (১৯৬৮)’, ‘যথা-শব্দ (১৯৭৪)’, ‘কোরআন সূত্র (১৯৮৪)’, ‘ভাষার আপন পর (২০১২)’ ইত্যাদি। তাঁর রচিত প্রবন্ধগ্রন্থের সংখ্যা ৪০টি। সাহিত্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে কৃতিত্বের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরষ্কার (১৯৮৪), একুশে পদক (২০০৭) সহ আরো বেশ কিছু সম্মাননায় ভূষিত হন। বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান এর বই সমগ্র পাঠকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। ২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি তিনি ঢাকায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ