“তৃতীয় ব্যক্তি” বই এর ফ্ল্যাপের লেখা
“স্বামী-স্ত্রী দুজনে ওত পেতে বসে আছে। যেন দুটি শিকারী বেড়াল। জানলা গলে খুস করে পড়লেই খপাত করে তুলে নেবে। ভোঁদড়ের মাছ ধরার মত। এ অঞ্চলে সারাদিনে দুবার ডাক বিলি হয়। একবার সকাল এগারটায়, আর একবার বেলা তিনটে নাগাদ। দু-চার মিনিট এদিক ওদিক হতে পারে। কী এমন চিঠি আসতে পারে, যা এইভাবে খাবলা মেরে ধরতে হয় সবার আগে!” সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের নতুন উপন্যাস ‘তৃতীয় ব্যক্তি’র এ-ভাবেই শুরু। আরেক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা আমাদের প্রাত্যহিক জীবন। বস্তুত যে-উৎকণ্ঠা নিয়ে বসে আছে ওই দম্পতি, তা শুধু একটি বিশেষ পরিবারের নিজস্ব ব্যাপার নয়, বহু পরিবারেরই ঘটনা। মেয়ে যখন বড় হচ্ছে তখন তাকে ঘিরে বাবা-মার মনে যে উদ্বেগ-সংশয় তাই নিয়েই এই উপন্যাস। এর চারপাশে চলতি সমাজ ও সময়ের নানান জীবন্ত ছবি নিজস্ব অনন্য ভঙ্গিতে দেখিয়েছেন সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়। দেখিয়েছেন, কীভাবে কমছে জীবনের নিরাপত্তা, বাড়ছে সংশয়, কীভাবে বিকৃত হয়ে চলেছে সমাজ, আগলে রাখার চিন্তা কীভাবে পরিব্যাপ্ত। সেইসঙ্গে শুনিয়েছেন দুরন্ত কৌতূহলকর একটি কাহিনী, যে-কাহিনী জীবনকে যথার্থ মূল্যে দেয় চিনিয়ে, ছড়িয়ে দেয় অভাবিত এক বেদনা, ভেঙে দেয় আমাদের বহু অন্ধ অহমিকা।