“কাছিমের পিঠে গণতন্ত্র” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
আজ বাংলাদেশের মুখাবয়বের দিকে তাকালে স্তব্ধ হয়ে যাই; চোখে জল আসে। যেখানে আমাদের শিকড় প্রােথিত, যুগ যুগ ধরে তারই মাঠে মাঠে খণ্ডিত কলিজাগার, খুব আয়ােজন করে কর্ষণকেলি, মনুষ্য-দেহের ব্যবচ্ছেদিত হাড় মজ্জার বিক্রয়-হাট, অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগের পুনর্পাঠ, এক অধিকার মেরে আরেক অধিকার আদায়, অন্যের মুখের গ্রাস নিজ মুখে পুরে আয়েশ করে চর্বণ এবং গণতন্ত্রের নামে যখন ফণাতন্ত্র দেখি তখন আমাদের শুভ্রসৌম্য; নন্দনপ্রিয় হৃদয় কুঁকড়ে ওঠে, বিলাপ করে। ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি শুধু, কিছুই বলতে পারি না, কিছুই করতে পারি না। কারণ কাছিমের পিঠে গণতন্ত্র চলছে। কারণ এখনাে যে দেশে গণতন্ত্র চর্চার বদলে ফণাতন্ত্রের চর্চা হচ্ছে এবং এর কড়া নাড়ছে যুগের পরে যুগ উল্টেপিল্টে একই গােত্রের স্বার্থভােজী ধনতন্ত্রের প্রবর্তকরা- যারা মানবিক ফসলের মূল্য বােঝে না, বানরের মতাে দিনের প্রােজ্জ্বল আলােয় চলতে পারে না, চলে রাতের অন্ধকারাচ্ছন্ন অলিগলিতে হামাগুড়ি দিয়ে। এই বইতে ফণাতন্ত্রের এই বিষাক্ত ছােবল দেখে ডুকরে কেঁদে ওঠা আমার উর্বর হৃদয়ের বিষাদগ্রস্ত কথাগুলিই কবিতার ছত্রে-ছত্রে নন্দনশিল্পের ঝালর পরিয়ে প্রকাশ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।