“রূপান্তর” বইটির ভূমিকার অংশ থেকে নেয়া:
‘রূপান্তর যথার্থই একটি অত্যাশ্চর্য গল্প, সেই সঙ্গে সঙ্গে কাফকার প্রতিনিধিত্বমূলক রচনাও বটে। কাফকা-সাহিত্যের সবগুলাে প্রধান লক্ষণ এর মধ্যে বিদ্যমান। মানুষের জীবন, কর্ম ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে দুশ্চিন্তা-দুর্ভাবনা দুঃস্বপ্ন মানুষের নিঃসঙ্গতা, বিচ্ছিন্নতা ও অপরের সঙ্গে যােগাযােগ স্থাপনে ব্যর্থতা; নিজেকে অপরের কাছে স্পষ্ট করে তােলার অক্ষমতা; নিজের আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভয়-ভাবনার কথা অন্যকে কিছুতেই বােঝাতে না-পারা; মানুষের চরম ঔদাসীন্য ও নিস্পৃহতা; বর্তমানের বিরাজমান পরিবেশ-পরিস্থিতির কারণে অতীতের স্নেহ-মমতা-সহানুভূতির অবলুপ্তি; তারুণ্যের কাছে তাৎক্ষণিক জীবনের অপ্রতিরােধ্য আকর্ষণ এবং তার ফলে জীর্ণ-অসুস্থ-মৃতকে দ্রুত বিস্মৃত হওয়া-এই সবই কাফকা তাঁর রূপান্তর’ গল্পে তুলে ধরেছেন। গল্পটি কাফকার অন্যান্য রচনার মতােই একাধিক স্তরে উপভােগ্য, বহুমাত্রিক ব্যঞ্জনায় ঋদ্ধ; এর মধ্যে ফ্যান্টাসি আছে, রূপক-প্রতীক আছে, আর তার আড়ালে আছে নির্মম সত্যের উদ্ভাসন। এখানে নাটকীয়তা আছে, নিখুঁত চরিত্র-চিত্রণ আছে, সর্বোপরি আছে বিশদ বাস্তববাদী বর্ণনার ঐশ্বর্য।