ইতালিয়ান লেখক কার্লো কল্লোদি (১৮২৬-১৮৯০) তাঁর নন্দিত শিশুতোষ গ্রন্থ চরহড়পপযরড় দিয়েই বিশ্ব জয় করেছেন। এই গ্রন্থ সারা বিশ্বের শৈশব-কৈশোর অধিকার করে আছে। বাংলাদেশের শিশুরা পিনোকিও নামক কাঠের মানুষটিকে কেবল কার্টুনের ছবির মতোই কিছু সময়ের আনন্দ হিসেবে নেড়েচেড়ে দেখছে। মানুষ শব্দটি যে গভীরতর অর্থকে ধারণ করে, কাঠের পুতুল পিনোকিও সেই অর্থবহ বাস্তবতার নানা চড়াই-উৎরাই অতিক্রম করেছে। নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে সময়ের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলেই মানুষের বেঁচে থাকা সার্থক হয়, মানুষ সত্যিকার অর্থে মানুষ হয়ে ওঠে। পিনোকিও-র জীবনে যা কিছু ঘটেছে, তার অনেক কিছুই হয়তো যুক্তি ও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গির বিচারে ব্যাখ্যা করা সম্ভব নয়। কিন্তু মানুষের মন তো সব সময় যুক্তি ও বুদ্ধির দাসত্বকে স্বীকার করতে চায় না। যা কখনো হয় না, হওয়া সম্ভব নয়, তার জন্য আমাদের যে অস্থিরতা, তার একটা গুরুত্ব নিশ্চয়ই আছে। অসম্ভবের পাথার পেরুনোর সেই রূপকথার মতোই পিনোকিও-র ঘটনাবহুল জীবন। যে জীবন তার লক্ষ্য, সেই মহৎ-সুন্দর-আলোকিত-আনন্দময় মানব জীবনের স্নিগ্ধ ছায়ায় বসে পিনোকিও উচ্চারণ করেছে চিরন্তন উক্তি : সবার ওপরে মানুষ সত্য।