বই পরিচিতি:
সব মানুষের মাঝেই নাকি ‘প্রেমিক’ হৃদয় লুকিয়ে থাকে! আসিফ মেহ্দীর মাঝেও নিশ্চয় আছে। তা না হলে রম্য আর সায়েন্স ফিকশনের জগৎ থেকে তিনি হঠাৎ প্রেমের উপন্যাস লেখায় হাত দিলেন কেন?
অবশ্য আসিফ মেহ্দীর এই উপন্যাসটিকে ঠিক প্রেমের উপন্যাসও বলা যাবে না। কী বলা যায়-সামাজিক উপন্যাস? মানুষের জীবনের নানা দিক প্রতিফলিত হয়েছে বলে এটিকে বরং জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাস বলাই ভালো। এর আগে নিয়মিত রম্যগল্প, সায়েন্স ফিকশন আর ন্যানো কাব্য লিখলেও ‘অপ্সরা’ নামের এই উপন্যাসটিই আসিফ মেহ্দীর লেখা প্রথম জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাস।
উপন্যাসটি কতটুকু জীবনঘনিষ্ঠ হয়েছে, তাতে কতটুকুই বা জীবনবোধ রয়েছে, পড়ার পর সে সিদ্ধান্তটা পাঠকই নেবেন। জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাসে অভিষিক্ত আসিফ মেহ্দীর সফলতাও নির্ভর করছে সেই সিদ্ধান্তের ওপরই।
অপ্সরা ও আসিফ মেহ্দী-উভয়ের জন্যই শুভকামনা।
– পাভেল মহিতুল আলম
লেখক ও আইডিয়ানিস্ট, রস আলো
লেখক পরিচিতি:
আসিফ মেহ্দী তাঁর পাঠকের কাছে পরিচিত নানা পরিচয়ে। বিশেষ করে রম্য, বিজ্ঞান কল্পকাহিনি আর ন্যানো কাব্য-এই তিন শাখাতে তিনি পাঠকপ্রিয় হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। প্রথম জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাস ‘অপ্সরা’ দিয়ে এবার আত্মপ্রকাশ করলেন পুরোদস্তুর ঔপন্যাসিক হিসেবে। দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ ও ‘রস আলো’তে রম্য লিখছেন বহু আগে থেকেই। সেই সূত্রে প্রথম বইটাও রম্যগল্পের। ‘বেতাল রম্য’ নামের সেই বইয়েই আসিফ মেহ্দী লাভ করেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। এরপর একে একে বেরিয়েছে ‘ফ্রিয়ন’ ও ‘হিগস প্রলয়’ নামের দুটি সায়েন্স ফিকশন এবং বিভিন্ন সময়ে লেখা ছোট ছোট ছড়া নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ‘ন্যানো কাব্য’ ও ‘ন্যানো প্রহর’ নামের আরও দুটি বই।
ছেলেবেলায় কতটা দুরন্ত ছিলেন, শান্ত-শিষ্ট চেহারার আসিফ মেহ্দীকে দেখলে তা একদমই বোঝার উপায় নেই! দুষ্টুমিতেও কম ছিলেন না। বড় হওয়ার পর চলাফেরা বা ব্যক্তিগত জীবনের অন্য সব জায়গায় দেখা না গেলেও রম্য লেখালেখিতে সেই দুরন্তপনা আর দুষ্টুমির ছাপটা ঠিকই স্পষ্ট। তাই বলে লেখাতে ‘ম্যাচিউরিটি’টাও কিন্তু অনুপস্থিত না। বরং ব্যঙ্গ আর হাসির সঙ্গে গভীর জীবনবোধের প্রতিফলন ঘটিয়েই আসিফ মেহ্দী এ সময়ের জনপ্রিয় লেখকদের কাতারে নিজের অবস্থানটা বেশ পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন। জীবনঘনিষ্ঠ বা সামাজিক উপন্যাসের ক্ষেত্রেও তিনি প্রতিভার স্বাক্ষর রাখবেন এমনটা আশা করাই যায়।
আসিফ মেহ্দীর জন্ম ১৯৮৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর। বর্তমানে দেশের একটি শীর্ষ মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অবসর বলে তাঁর কিছু নেই বললেই চলে। কারণ প্রতিদিন কর্মস্থলের দায়িত্ব শেষ করে বাকি সময়টা লেখালেখির পেছনেই ব্যয় করেন তিনি। আসিফ মেহ্দীর প্রকাশিত-অপ্রকাশিত, নতুন-পুরোনো লেখাগুলো নিয়মিত পড়তে পারেন তাঁর পেজ ‘একটু হাসুন’ (www.facebook.com/Ektu.Hashun) থেকে।
– পাভেল মহিতুল আলম
লেখক ও আইডিয়ানিস্ট, রস আলো
বইটির উৎসর্গপত্র:
সবসময়ই একদল বন্ধুকে আমি পাশে পাই। তাদের কাছ থেকেই পাই দুঃখকে উদযাপন করার দুঃসাহস; হেসেখেলে কষ্টকে বরণ করার স্পর্ধা! ফেসবুকে আমার ফ্রেন্ডস এবং ফলোয়ারস-এর তালিকায় থাকা বন্ধুদের কারণেই জীবনের বন্ধুর পথ আমার জন্য হয়েছে সমতল! তাদের অতলস্পর্শী ভালোবাসার কোনো বিনিময়মূল্য হয় না জানি; তবুও আমার কাছে যা অমূল্য মনে হয়, তা-ই তাদেরকে উৎসর্গ করলাম। আমার এই প্রথম উপন্যাসটি ফেসবুকের সব বন্ধুর জন্য!
ভূমিকা (লেখকের কথা):
কিছু মানুষ পরম আস্থা নিয়ে আমাকে তাদের জীবনের ঘটনা বলেন। ভালোবেসে দাবি করেন, আমি যেন গল্পের ছলে তাদের কাহিনিগুলো পাঠকদের শোনাই। মানুষমাত্রই ভালোবাসার দাবির কাছে অসহায়! আমিও অসহায় হয়ে পড়ি। উপরন্তু ব্যস্ততার কারণে লিখতে বসতে না পারায় আমার অসহায়ত্ব অস্বস্তিতে রূপ নেয়। বেশিদিন অস্বস্তি নিয়ে বেঁচে থাকা যায় না! হঠাৎ অস্বস্তি কমানোর জন্য খানিকটা অবসর পেয়ে গেলাম। ভাবলাম, আদা-চা খেয়ে লেগে পড়ি! বেশ কয়েকজনের জীবনের ঘটনা আমার পরিচিত পরিমণ্ডলের ছাঁচে ফেলে লিখে ফেললাম ‘অপ্সরা’।
এটি আমার লেখা প্রথম জীবনঘনিষ্ঠ উপন্যাস। মানুষ হিসেবে এতে আমার ভুল-ত্রুটি থাকাই স্বাভাবিক। বইটি কারও অস্বস্তির কারণ না হলেই আমি খুশি। তবে এটি যদি কারও মন বিন্দুমাত্র ছুঁতে পারে, তাহলে আমার হৃদয় আনন্দোচ্ছ্বাসে ভেসে যাবে!
আসিফ মেহ্দী
শ্যামলী, ঢাকা।
১০.০১.২০১৪