“১৯৫২ : নিছক কোন সংখ্যা নয়…..”বইটির মুখবন্ধ:
শহরের উপর দিয়ে কালবােশেখি বয়ে যাবার পর বৃষ্টি নেমেছে। হালকা বৃষ্টির সাথে বইছে চমৎকার বাতাস। প্রথমবারের মতাে গাড়ির ওয়াইপারটা কাজ করতে শুরু করলাে ডানে-বামে হেলেদুলে। ড্রাইভিং সিটের খােলা জানালা দিয়ে চোখেমুখে বাতাসের ঝাপটা এসে লাগতেই শিশ দিয়ে প্রিয় একটি গানের সুর তােলার চেষ্টা করলাে কিন্তু পারলাে না। আপন মনে হেসে ফেললাে। আজ মন মেজাজ খুবই ভালাে। ভালাের যদি কোনাে পরিমাপ থাকতাে এটা হতাে সর্বোচ্চ পরিমাণের! কতােদিন এই স্বপ্নটা দেখেছে, কতাে প্রতীক্ষার পরই না আজ এটা পূরণ হয়েছে!
| গাড়ির প্রতি তার এই পাগলামিটা অন্য কেউ হয়তাে পুরােপুরি বুঝতে পারবে না। পাগলামিটা সে মনেপ্রাণে লালন করে এসেছে শৈশব থেকেই। এতােদিন শুধু অন্যের গাড়ি দেখেছে, কিছুক্ষণের জন্য চালিয়ে উপভােগ করেছে। আর মনে মনে ভেবেছে একদিন তারও গাড়ি হবে।
গাড়ি কেনার অনেক আগে থেকেই বিদেশী কার-ম্যাগাজিনগুলাে নিয়মিত পড়তাে সে। নতুন কোন্ মডেল বাজারে এসেছে, কোন্ কোম্পানির গাড়ির কি কি নতুন বৈশিষ্ট, ইঞ্জিন, গিয়ার, অ্যাকসেসরিতে নতুন নতুন কি প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে সব খবরই রাখতাে; স্বপ্ন দেখতাে একদিন এমন সময় আসবে যখন দু’হাত ধরে থাকা স্টিয়ারিংটা হবে একান্তই নিজের! |
স্টিয়ারিংটার দিকে তাকালাে। দীর্ঘদিনের সেই স্বপ্ন তার পূরণ হয়েছে। কেউ-কথা-না-রাখার তেত্রিশ বছর বয়সে!
মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গাড়িটার সাথে তার এক ধরণের আত্মিক যােগাযােগ তৈরি হয়ে গেছে। সে এখন অনুভব করতে পারছে যন্ত্রটাকে। একেবারে পােষ মানানাে জন্তুর মতােই তার কথা শুনছে যেনাে। | গতকাল দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন শাে-রুম ঘুরে অবশেষে সন্ধ্যার একটু আগে একে তার মনে ধরে। আর সবার মতাে প্রথম দেখায় প্রেম ছিলাে না, কিংবা বাইরে থেকে চাকচিক্য দেখে একে নিজের করে নেবার সিদ্ধান্ত নেয় নি। আবার এমনও নয়, অটোমােবাইলের উপর তার যে অগাধ জ্ঞান সেই জ্ঞানের উপর ভর করে অনেক যাচাই-বাছাই করার পর একে তার পছন্দ হয়েছে। সত্যি বলতে, গাড়িটা নির্বাচন করার সময় ওই জ্ঞানের খুব বেশি কাজে লাগে নি। সে এটা বাছাই করেছে একেবারে ভিন্ন এক পদ্ধতিতে! | গাড়ি দেখতে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে এটা ওটা নেড়েচেড়ে দেখে সবাই,