বই পরিচিতি:
আসিফ মেহ্দীর সায়েন্স ফিকশনেও থাকে রম্য-এর সঙ্গে গভীর জীবনবোধের প্রতিফলন। লেখকের গল্প বলার ভঙ্গি পাঠকমহলে সাদরে গৃহীত হয়েছে। তাঁর লেখা সাই-ফাইগুলো শুধু পাঠকপ্রিয়তাই লাভ করেনি, স্থান করে নিয়েছে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায়। তাঁর তিনটি সায়েন্স ফিকশন ‘ফ্রিয়ন’, ‘হিগস প্রলয়’ এবং ‘এলিমোন’-এর আশাতীত সাফল্যের ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত হলো ‘সাই-ফাই ত্রয়ী’। এখানে লেখকের প্রকাশিত তিনটি বইয়ের সবগুলো বিজ্ঞান কল্পকাহিনি মলাটবদ্ধ হয়েছে।
লেখক পরিচিতি:
সাহিত্যের প্রতি আসিফ মেহ্দীর ঝোঁক ছাত্রজীবন থেকেই। দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ ও ‘রস আলো’তে লেখার সুবাদে রম্যলেখক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন আগেই। সেই সূত্রে প্রথম বইটাও রম্যগল্পের। ‘বেতাল রম্য’ নামের সেই বইয়েই আসিফ মেহ্দী লাভ করেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। এরপর একে একে প্রকাশিত তাঁর প্রতিটি বই শুধু পাঠকপ্রিয়তাই লাভ করেনি, উঠে এসেছে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায়। সাম্প্রতিক সময়ে লিখছেন দেশসেরা কিশোর ম্যাগাজিন ‘কিশোর আলো’তে। ব্যঙ্গ আর হাসির সঙ্গে গভীর জীবনবোধের প্রতিফলন ঘটিয়েই আসিফ মেহ্দী এ সময়ের জনপ্রিয় লেখকদের কাতারে নিজের অবস্থানটা বেশ পাকাপোক্ত করে ফেলেছেন।
আসিফ মেহ্দীর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা নয়।
উপন্যাস: মায়া (২০১৫), অপ্সরা
সায়েন্স ফিকশন: এলিমোন (২০১৫), সাই-ফাই ত্রয়ী (২০১৫), হিগস প্রলয়, ফ্রিয়ন
ন্যানো কাব্য: ন্যানো কাব্য, ন্যানো প্রহর
রম্যগল্প: বেতাল রম্য
এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই ঢাকা বোর্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্ট্যান্ড করেছেন আসিফ মেহ্দী। বুয়েট-এ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করেছেন। ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় নিজ ক্যাডারে ১ম স্থান অধিকার করে বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের গবেষণা ও গ্রহণ কেন্দ্রে সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। আসিফ মেহ্দীর বইগুলো সম্পর্কে আরও বিস্তারিত পাবেন তাঁর ওয়েবসাইটে (www.asifmehdi.com)।
বইটির উৎসর্গপত্র:
মহৎ কাজগুলোর একটি হলো, অন্যের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করা! সেই স্বপ্নপূরণ যদি হয় মেধার যোগ্যতায়, তাহলে তা হয় মহত্তর। এমন কাজই করেন তাঁরা চারজন। নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে তাঁরা অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রীকে লক্ষ্য অর্জনের জন্য যোগ্য করে গড়ে তুলছেন। শুভকামনা মানুষ গড়ার চার কারিগরকে-
মোঃ আকমল হোসেন
মোঃ মনিমুল ইসলাম
মোঃ মনোয়ার হোসেন
মোঃ রুহুল আমিন
ভূমিকা (লেখকের কথা):
এক বিদেশিনীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম যে তাদের দেশে সাহিত্যের জনপ্রিয় শাখা কোনটি। উত্তরে বলেছিলেন, ‘ডিসটোপিয়া’! জগতের মধ্যে অরাজকতা-অস্বাভাবিকার আরেক নাম ডিসটোপিয়া। এটির চরম উপস্থিতি সম্ভব ফ্যান্টাসি ও সায়েন্স ফিকশন (সাই-ফাই) টাইপের কল্পকাহিনিগুলোতে। বিজ্ঞানের দাপটের এই যুগে পৃথিবীবাসীর সাহিত্যরুচি সাই-ফাইকে লুফে নিয়েছে। আশার কথা, আমাদের দেশেও সায়েন্স ফিকশন দিনেদিনে সাহিত্যের শক্তিশালী একটি শাখায় পরিণত হচ্ছে।
কিছুদিন আগে কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদ-এর নেতৃত্বে আমরা দশজন প্রতিষ্ঠা করেছি ‘বাংলাদেশ সায়েন্স ফিকশন সোসাইটি’। মনে শঙ্কা তো ছিলই; তবু ভেবেছি ‘দশে মিলে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ’। সেই শঙ্কা বাষ্পীভূত হয়ে গেছে সায়েন্স ফিকশন সোসাইটির প্রথম আয়োজনের পরই। ‘সায়েন্স ফিকশন বইমেলা-২০১৫’তে পাঠকবন্ধুদের বিপুল অংশগ্রহণ আমাদেরকে করেছে বিস্মিত, মুগ্ধ ও অনুপ্রাণিত!
আমি গণিতের ভক্ত। কারণ, গণিতে সমস্যাগুলোর একটি ছোট সুন্দর সমাধান থাকে। কিন্তু জীবন জটিল হিসাবের জায়গা। এখানে সব প্রবলেমের সহজ-সুন্দর সলিউশন থাকে না। অনেক সময় বাস্তবিক সমস্যাগুলো নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করলে সেটি সমাধানের পথে না গিয়ে আরও বড় প্রবলেম তৈরি করে! তবে কল্পনার জগতে সমাধানে পৌঁছানো যায় ইচ্ছেমতো। তাই বাস্তব জগতের চেয়ে কল্পনার জগৎ আমাকে টানে বেশি। হয়তো একারণেই সায়েন্স ফিকশন লিখতে একটু বেশিই ভালোবাসি।
লেখালেখির পথে আপনাদের ভালোবাসা পেয়ে আমার সাহস বেড়ে গেছে অকল্পনীয়। অন্বেষা প্রকাশন-এর শাহাদাত ভাই আমার সাই-ফাইগুলো এক মলাটের মধ্যে আনতে চাইলেন। আপত্তি করার প্রশ্নই নেই। ‘সাই-ফাই ত্রয়ী’ মূলত আমার তিনটি সায়েন্স ফিকশন ‘ফ্রিয়ন’, ‘হিগস প্রলয়’ এবং ‘এলিমোন’-এর একটি সংকলন। তিনটি বইয়ের মোট পাঁচটি সাই-ফাই এখানে আছে। পরিশেষে, একটিই চাওয়া। সায়েন্স ফিকশনের বইয়ে ন্যানোটোগ্রাফ দিতে গেলে আমি সেই চাওয়াটিই ব্যক্ত করি, ‘কল্পগল্পে রাঙলে মন, সার্থক হবে এ আয়োজন!