উর্দু কবিতার জগতে তথা বিশ্বসাহিত্যে সবচাইতে আলােচিত ও খ্যাতিমান কবি ফয়েজ আহমদ ফয়েজ। ইংরেজি অনুবাদের মাধ্যমে ফয়েজের খ্যাতি ইকবালের মতাে উপমহাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে ইউরােপ, এমনকি সােভিয়েত ইউনিয়ন পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল। ১৯১১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ফয়েজ আহমদের জন্ম। পাকিস্তানের শিয়ালকোটে। ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১ ছিল তাঁর জন্মশতবার্ষিকী। উর্দু সাহিত্যের সব শাখায় কাজ করেছেন। ১৯৬২ সালে লেনিন শান্তি পুরস্কার লাভের পর রুশ ভাষায় তাঁর কবিতা অনূদিত হয় এবং ফয়েজ কবিতাসমগ্র প্রকাশিত হলে সেখানে দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। নােবেল পুরস্কারের জন্যে তার নাম প্রস্তাবিত হয়েছিল। আজীবন মার্কসবাদে বিশ্বাসী ফয়েজ জেল খেটেছেন, দেশত্যাগী হয়েছেন কিন্তু নিজের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি। তিনি আমৃত্যু বলে গেছেন,আমি মার্কসবাদী। এই বিশ্বাসে অটল ছিলেন সর্বদা। পাকিস্তানের প্রতিটি শহরে, ভারতের পঞ্চাশটি শহরে এবং বিশ্বের সাতাশটি দেশে তাঁর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপিত হয়। বিশ্বের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে ফয়েজের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হয়েছে। তার জন্মের একশ বছর পর ভাবতেও অবাক লাগে, কীভাবে, কোন শক্তিতে দুনিয়ার এতগুলাে মানুষকে কবি তার ভক্তে পরিণত করতে এবং ঐক্যবদ্ধ করতে পারেন। এরপর বললে অত্যুক্তি হবে না, ইকবালসহ ভারতের শ্রেষ্ঠ উর্দু কবিদের সঙ্গে একমাত্র ফয়েজই টেক্কা দিতে পারেন। তবে বেদনাদায়ক হলাে, সত্যিই বাংলাদেশেও ফয়েজ-ভক্তের কমতি নেই। অথচ এই অনন্যসাধারণ কবির জন্মশতবার্ষিকী রাজধানী ঢাকায় নীরবে চলে গেল । শুধুমাত্র কবি আসাদ চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত বাংলা-উর্দু সাহিত্য ফাউন্ডেশন কবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি অনুষ্ঠানের আয়ােজন করেছিল।