“উত্তরাধিকার”বইটির প্রথম ফ্লাপের কিছু কথা:
উত্তরবঙ্গের একটি চা-বাগানের পটভূমিকায় এই উপন্যাসের কাহিনীর সূত্রপাত। ভারতের প্রথম স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সময় এ উপন্যাসের নায়ক অনিমেষ প্রথম শুনলাে ‘বন্দেমাতরম’ শব্দটি। শব্দটির অর্থ পুরােপুরি উপলব্ধি করতে না পারলেও তার ধ্বনি-ব্যঞ্জনা কিশাের অনিমেষকে নাড়া দেয়। এই শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা আর তার মূল্য বুঝতে বুঝতে সেই কিশাের হয়ে উঠল সদ্য তরুণ।। তারপর সেই তরুণ উচ্চশিক্ষার জন্য এল। কলকাতায়। সেইদিন সারা শহরে আগুন জ্বলছেএক আন্দোলনের ভয়ঙ্কর পরিবেশ। নিজের সম্পর্কে দেশের সম্পর্কে পুরনাে বিশ্বাস, শ্রদ্ধা-ভালােবাসার সঙ্গে নতুন করে তার পরিচয় শুরু হলাে। এই কাহিনী সেদিনকার সেই কিশাের তরুণ অনিমেষের আত্ম-অনুসন্ধানের কাহিনী, আত্ম-জিজ্ঞাসার কাহিনী। বাংলা সাহিত্যের বর্তমান কথাশিল্পীদের মধ্যে সমরেশ মজুমদার অগ্রগণ্য। তাঁর বিশিষ্ট রচনাশৈলীর জন্য একতম বলেও অন্যায় হবে না। তার অন্য উপন্যাসে পাঠকগণ সে পরিচয় পেয়েছেন। উত্তরাধিকর উপন্য সে নিজেকে নিজেই অতিক্রম করে গেছেন লেখক। এই ধরনের ঘরােয়া গল্পে অনুপম প্রসাদ-গুণে ভরা মনােমুগ্ধকর রচনার মধ্যে এ কালের তরুণের জীবন-জিজ্ঞাসাকে মূর্ত করে তােলার দৃষ্টান্ত বাংলা সাহিত্যে অতি বিরল। ১৯৮৪ সালে অকাদেমি পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন নায়ক অনিমেষের মধ্য জীবন-পর্বের কাহিনী, যে জীবনের উন্মেষ হয়েছে এই উত্তরাধিকার উপন্যাসে।।