“উপাখ্যান : মুজিব-ইয়াহিয়া-ভুট্টো এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ” বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
১৭৯১ সালে ২৫ মার্চ মধ্যরাতে সমগ্র বাংলাদেশব্যাপী তল্কালীন পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ড্যান্ট ও গভর্নর লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খানের কঠোর আদেশে পাকি-সেনাবাহিনী যে-নিষ্ঠুর গণহত্যায় লিপ্ত হয়, মেতে ওঠে ধ্বংসলীলার নারকীয়। তাণ্ডবতায়; সেটি কোনাে হটকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপার ছিল না। বরং এটা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত একটি ব্যাপার: যা ২৫ মার্চ রাত্রি থেকে অন্তত সত্তর দিন (১৪ জানুয়ারি, ১৯৭১)। আগেই গােপন আলাপ-আলােচনাক্রমে এবং পশ্চিম-পাকিনের সেনাবাহিনী ও ক্ষমতালিন্দু অভিজাত রাজনীতিক জনাব জুলফিকার আলি ভুট্টো সাহেবের ইচ্ছায় । ঘটানাে হয়েছিল। কঠিন বাস্তবতা এই যে, যে-ব্যাপারটা বিগত একদশক ধরে পাকিস্তানের প্রথম সামরিক আইন প্রশাসক ও স্বঘােষিত প্রেসিডেন্ট ফিল্ড-মার্শাল আইয়ুব খান করব-করব করে শেষপর্যন্ত করতে সাহস পাননি; সেই ব্যাপারটায় তার সুযােগ্য উত্তরসূরি, লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খান, পশ্চিম-পাকিস্তানের অভিজাত রাজনীতিক পিপলস পার্টির প্রতিষ্ঠাতা জনাব জুলফিকার আলি ভুট্টো সাহেবের চরম উষ্কানি ও ইন্ধনে সেটা করতে সম্মত হন, এবং ২৫ মার্চ সকাল সাড়ে দশটার সময় তার চূড়ান্ত অনুমােদন দেন। অতঃপর তিনি ওইদিন সন্ধ্যায় সর্বোচ্চ গােপনীয়তার মধ্যে দিয়ে ঢাকা থেকে ভেগে যান। ক্ষমতায় টিকে থাকতে এছাড়া তখন তার আর করার কিছুই ছিল না!