মির্জা মুজাহিদ এর ছোটগল্প সঙ্কলন
কলমে না লিখলেও মানুষের গল্প থেমে থাকে না। কেন্দ্রীয় চরিত্রে মানুষ থাকে বলেই পৃথিবীতে গল্প এগিয়ে যায়। মানুষে মানুষে গল্পের সংঘাত থাকে, সংঘর্ষ থাকে, ভিন্নমত থাকে, মিল ও থাকে- গল্প এভাবেই বয়ে চলেছে গুহার দেওয়াল থেকে বই এর পাতায়। এ বইয়ের গল্পগুলোও তার ব্যতিক্রম নয়, কিন্তু কিছুটা বিপ্রতীপ, কিছুটা অসামন্তরাল। এখানে পরবাস্তবতা এই সময়কে অতিক্রম করে যায়নি, খুব কাছাকাছি বসে থাকা সরল প্রেমিকের মত আপনার কাছেই সে ঘোরাফেরা করে। অল্প টাকা বেতনের মানুষটি শহরে খেই হারিয়ে ফেলেনি, সে ভালোবাসায় সাহস রাখতে পারছে, প্রতিদিন মহানগরের মানুষের সাথে মিশে যেয়ে সন্ধ্যায় আশার ঝুলি নিয়ে ফিরে আসছে।
এখানে মুক্তিযুদ্ধ আছে, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ কোন গল্প নয়, কখনই তা ছিল না। কিন্তু স্বপ্ন দেখার যন্ত্রনা আছে, যুদ্ধ থেকে না ফেরা ছেলের দিকে চেয়ে থাকা মায়ের প্রতিজ্ঞা আছে, দীর্ঘশ্বাস নেই। মানুষ আছে বলেই মনের ভাঙ্গা গড়াও এখানে এসেছে, সেটা কিছুটা চরের মাটির মত।
যৌনতা মানুষের সহজাত, সেটাকে এড়িয়ে গল্প হয় না। হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা ফি বছরের পলিতে ভাটির মানুষ ফসলের মত করে ভালোবাসা বুনে চলেছে কয়েক হাজার বছর, বিধৌত বন্যায় আমাদের পূর্বপুরুষ ক্রমান্বয়ে শক্ত হয়েছে, মাটিতে বিশ্বাস রেখেছে,নারীতে নিঃশ্বাস ফেলেছে, নিঃসন্দেহে!
বিশ্বাস ভেঙ্গে যায় জেনেও মানুষ বিশ্বাস করতে ভালোবাসে।
‘বিপ্রতীপ’ সে গল্পগুলোই বলেছে, সরল পুরুষের বিশ্বাসে ভালোবাসায় নিঃসঙ্কোচে।