“অবলৌকিক” বইটির সম্পর্কে কিছু কথা:
কী হয়, যখন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায় ভীষণ অহংকারী একজন পুরুষের সকল গৌরব? ভীষণ সফল আরমান সাহেব দিন দিন কুঁকড়ে যেতে থাকেন নিজের মাঝে, শারীরিক অক্ষমতা স্ত্রীকে করে তােলে যােজন যােজন মাইল দূরের মানুষ, হতাশার অন্ধকারে ডুবে যেতে যেতে তাঁর শেষ আশ্রয় হয় নিন্দিত বেশ্যাপল্লীর এক দেহপসারিনি…।
এই গল্প সুরাইয়া হিজড়ার, বস্তির সকলে যাকে ‘আম্মা’ বলে জানে। কথিত আছে এই মধ্যবয়সী দেহপসারিনির কাছে মেলে সকল রোগের ঔষধ কোথেকে এসেছে? কেউ জানে না! কী পরিচয়? কেউ জানে না! নিজের যৌবনে কুখ্যাত দেহপসারিনি সুরাইয়া এখন দিনের আলোতে বেশ্যা দলের নেত্রী, কিন্তু রাতের অন্ধকারে অন্য কেউ! বস্তির লোকে ফিসফাস করে, সুরাইয়া নাকি কথা বলাতে পারে মৃতদেরকেও…
সে, সুরাইয়া হিজড়া, মানুষের ভিড়ে আত্মগোপন করা আরও একজন অবমানব!
সত্যিই কি হিজড়ারা ঈশ্বরের ভুল সৃষ্টি, শরীরের বিচিত্র খামখেয়ালিপনা কিংবা স্রেফ একটা ভুল? নাকি প্রকৃতির কোনো গভীর রহস্যময় খেলা লুকিয়ে আছে অসম্পূর্ণ এই সৃষ্টির মাঝে? কেন প্রকৃতি তাদেরকে দেয়নি আরেকটি প্রাণ জন্ম দেয়ার ক্ষমতা? কী সেই খেলা, যা খেলে চলেছে প্রকৃতি ও মহাকাল সৃষ্টির সেই আদি থেকে? আর কী-ই বা পরিকল্পনা প্রকৃতির অবমানবদের নিয়ে? জবাব মিলবে ‘অবলৌকিকে’….
হয়তো জবাব দেবে আস্তাকুড়ে ফেলে দেয়া উন্মাদ সেই শিশুটি । কিংবা জবাব দেবে খোজা দেহরক্ষী পরিবেষ্টিত প্রাচীন রানী অথবা পিশাচী … আনাইডা!
এই গল্প একজন অবমানবের বিপরীতে একজন পিশাচীর প্রতিহিংসার । কিংবা বয়ান মানব সভ্যতার আসন্ন ভবিষ্যতের ।