আমার ছেলেবেলা

৳ 120.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
9848661573
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ৮০
সংস্কার 1st Published, 2017
দেশ বাংলাদেশ

“আমার ছেলেবেলা” বইটির ভূমিকা থেকে নেয়াঃ
মানুষের জীবনে শৈশব এবং কৈশাের বলে যে সময়টা আসে, তাই তার ছেলেবেলা। এর ব্যাপ্তি সীমাবদ্ধ এবং আয়ু অত্যন্ত সীমিত। তবে সীমিতকালের জন্য এলেও মানুষের জীবনে ছেলেবেলা আসে আনন্দে ভরা ঐশ্বর্য নিয়ে। মানুষ তা উপভােগ করে নিজেকে নিঃশেষে বিলিয়ে দিয়ে। ছেলেবেলার আয়ুষ্কাল স্বল্প হওয়ার কারণে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে থাকে। সে সঙ্গে মানুষকে করে তােলে। স্মৃতিভারাক্রান্ত। তখন প্রতিটি মানুষ তার হারিয়ে যাওয়া ছেলেবেলাকে ফিরে পাওয়ার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। অন্যদিকে সে যখন বুঝতে পারে তার ছেলেবেলা আর ফিরে আসবে না, তখন সে তার সুখদুঃখে মেশানাে ছেলেবেলার কথা আপনজনদের কাছে বলে আনন্দ পেতে চায়- এটা মানব জীবনের এক সহজাত প্রবৃত্তি। এই প্রবৃত্তিকে অস্বীকার করতে পারেননি বলেই মনীষীরা তাদের ছেলেবেলার কথা লিখে রেখে গেছেন। তার অতীতকে সমকালীন মানুষের হৃদয়কোণে সংরক্ষণ করার প্রয়াস পেয়েছেন। ফলে আমরা পেয়েছি মহামানবদের ছেলেবেলার সমৃদ্ধ বর্ণনা। ঘটনাবহুল জীবনের ছবি। | ছেলেবেলার কথা নিয়ে বহু বিখ্যাতজনই লিখেছেন- লিখেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও। তাঁর বইটির নাম ‘আমার ছেলেবেলা।’ এটি যে নিছকই একটি ছেলেবেলার বর্ণনাধর্মী বই নয়, আমার বিশ্বাস বােদ্ধা পাঠকরা তা অবলীলায় স্বীকার করবেন। কারণ রবীন্দ্রনাথ তাঁর বইটিতে শুধু ছেলেবেলার ঘটনাবহুল স্মৃতিই বর্ণনা করেননি, সমসাময়িক যুগকেও বর্ণনা করেছেন। সে সঙ্গে বলেছেন তাঁর চারপাশে থাকা আপনজনদের কথা। অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় উল্লেখ করেছেন তাঁর ভালােলাগা-মন্দলাগাকেও।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন একাধারে ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্পকার, চিত্রশিল্পী, সংগীতস্রষ্টা, অভিনেতা, কন্ঠশিল্পী, কবি, সমাজ-সংস্কারক এবং দার্শনিক। গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য প্রথম বাঙালি হিসেবে ১৯১৩ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরষ্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৬১ সালের ৭ মে তৎকালীন ব্রিটিশ-শাসিত ভারতে কলকাতার ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিমনা জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি লেখালেখিতে মনোনিবেশ করেন। ভানুসিংহ ঠাকুর ছিল তাঁর ছদ্মনাম। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বই মানেই এক মোহের মাঝে আটকে যাওয়া, যে মোহ পাঠককে জীবনের নানা রঙের সাথে পরিচিত করিয়ে দেয় নানা ঢঙে, নানা ছন্দে, নানা সুর ও বর্ণে। তাঁর ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাট্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর কিছুদিন পরই আলোর মুখ দেখে। কাবুলিওয়ালা, হৈমন্তী, পোস্টমাস্টারসহ মোট ৯৫টি গল্প স্থান পেয়েছে তাঁর ‘গল্পগুচ্ছ’ গ্রন্থে। অন্যদিকে ‘গীতবিতান’ গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে ১,৯১৫টি গান। উপন্যাস, কবিতা, সঙ্গীত, ছোটগল্প, গীতিনাট্য, প্রবন্ধ, ভ্রমণকাহিনীসহ সাহিত্যের সকল শাখাই যেন ধারণ করে আছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বই সমূহ। তিনি একাধারে নাট্যকার ও নাট্যাভিনেতা দুই-ই ছিলেন। কোনো প্রথাগত শিক্ষা ছাড়া তিনি চিত্রাংকনও করতেন। তৎকালীন সমাজ-সংস্কারেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এই গুণী ব্যক্তিত্ব। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষাতেই অনূদিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর বই সমগ্র। তাঁর যাবতীয় রচনা ‘রবীন্দ্র রচনাবলী’ নামে ত্রিশ খণ্ডে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৪১ সালের ৭ আগস্ট জোড়াসাঁকোর বাড়িতেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুর পর এতদিন পেরিয়ে গেলেও তাঁর সাহিত্যকর্ম আজও স্বমহিমায় ভাস্বর। আজও আমাদের বাঙালি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে বিশ্বকবির সাহিত্যকর্ম।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ