ছড়াকার হিসেবে লুৎফর রহমান রিটনের খ্যাতি ও জনপ্রিয়তা অভ্রভেদী। ছোটদের বড়দের সকলেরই প্রিয় তিনি। ছড়াকার রিটনের গদ্যশৈলীও বিপুলভাবে পাঠকনন্দিত। স্মৃতিকথা রচনার ক্ষেত্রে ছড়াকার রিটনের দক্ষতা অতুলনীয়। তাঁর গদ্যের সম্মোহনী শক্তিতে অভিভূত পাঠকের হৃদয় দ্রবীভূত হয় সহজেই। বর্ণিত ঘটনার দৃশ্যসমূহ এমন জাদুকরী ভাষায় তিনি নির্মাণ করেন যে, পাঠকের ভ্রম হয়, পাঠক অবলীলায় নিজেকে সেখানে উপস্থিত দেখতে পান। স্মৃতি যেহেতু একটা যৌথ ব্যাপার তাই কেউ নিজের কথা লিখতে গেলে তাঁর আশপাশের চেনা-অচেনা মানুষগুলোও সেখানে উপস্থিত হয় প্রবল প্রচণ্ড আধিপত্যসমেত। রিটন লিখতে গেছেন নিজেকে, কিন্তু লেখা হয়ে গেলো গুচ্ছ গুচ্ছ মানুষের গল্প। তিনি বলতে চাইলেন নিজের কথা কিন্তু বলার পরে দেখা যাচ্ছে সেটা আর তাঁর নিজের কথা রইলো না। সেটা হয়ে গেলো অনেকের কথা। আসলে অনেকের মধ্যেই তো একজন ‘আমি’র বসবাস। স্মৃতিগদ্যে উঠে আসা বাংলাদেশের বিখ্যাত মানুষদের সঙ্গে ছড়াকার রিটনের যাপিত জীবনের আনন্দ-বেদনার গল্পগুলো তাই পাঠকের আগ্রহের বিষয় হয়ে উঠেছে। খ্যাতিহীন অনামা মানুষদের সঙ্গেও তাঁর কতো যে গল্প আছে! সেই গল্পগুলোরই গ্রন্থরূপ- ভ্রমর যেথা হয় বিবাগী।