উম্মাহর প্রতি আহ্বান

৳ 250.00

লেখক
প্রকাশক
আইএসবিএন
(ISBN)
978-984-96590-9-9
ভাষা বাংলা
পৃষ্ঠার সংখ্যা ১৮৪
সংস্কার ২য় প্রকাশ, ২০২১
দেশ বাংলাদেশ

‘মুসলিমদের প্রতি অশ্রুঝরা আকুতি আলোর মিনার’ বইয়ের কিছু কথা:
ঈসা আ. পৃথিবী থেকে চলে যাওয়ার কয়েকশ বছর হয়ে গেল। পুরো পৃথিবীকে ঘিরে নিয়েছে নিকষ অন্ধকার। বায়তুল্লাহতে স্থান পেয়েছে মূর্তি! মহান পরওয়ারদেগারের উপাসনা করার মত কেউ নেই পুরো পৃথিবীতে। তখন মা আমেনার কোলজুড়ে নেমে এলো একটি আলোর রেখা। নিকষ অন্ধকারে তিনি জ্বালিয়ে দিলেন আলোর বাতি। কিন্তু অন্ধকারে খেই হারিয়ে ফেলা মক্কার মুশরিকরা তাঁর দাওয়াত কবুল করলো না। শুরু হল তাঁর উপর অত্যাচার; কিন্তু তিনি দমে যাওয়ার পাত্র নয়। আল্লাহর বাণী প্রচার করতে থাকলেন নির্বিরাম। কিন্তু তাদের অত্যাচারে একপর্যায়ে হিজরত করে মদিনায় চলে যান।
এরপর রচিত হয়েছে ইতিহাস। মদিনা থেকে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়েছে ইসলামের আলো পুরো পৃথিবীতে। তৎকালীন পৃথিবীর পরাশক্তি রোম এবং পারস্য মুসলমানদের কাছে মাথানত করতে বাধ্য হয়েছে। একপর্যায়ে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়ে স্পেনে গিয়ে আছড়ে পড়েছে ইসলামের বিজয়রথ। মদিনায় হিজরতের ত্রিশ বছরের মাথায় উমর রা. অর্ধপৃথিবী শাসন করেছেন।
এভাবে কেটেছে কয়েকশ বছর। আমাদের গাফলতির কারণে কাফেররা মাঝে মাঝে আমাদের উপর প্রাধান্য লাভের চেষ্টা করেছে; কিন্তু বারবার মুহাম্মাদ বিন কাসিম, কুতায়বা বিন মুসলিম, নুরুদ্দিন জঙ্গি, সালাহ উদ্দিন আইয়ুবি, রুকনুদ্দিন বাইবার্স আর সুলতান মুহাম্মদ ফাতিহদের তরবারি গর্জে উঠেছে।
কামাল আতাতুর্কের গাদ্দারির মাধ্যমে উসমানি খেলাফত বিলুপ্ত হয়। এরপর থেকে মুসলমানরা পৃথিবীতে মার খেয়েই যাচ্ছে। পবিত্র ভূমি বায়তুল মাকদিস পুনরায় অভিশপ্ত ইয়াহুদিরা নব্বই বছর থেকে দখল করে আছে। আফগান, ইরাক, ফিলিস্তিন, কাশ্মির, আরাকান, সিরিয়া, মিশর এবং বসনিয়ায় মুসলিমদের কচুকাটা করা হচ্ছে! মুসলমান মা-বোনদের আর্তচিৎকারে খোদার আরশ কেঁপে উঠছে! কিন্তু আমাদের আয়েশের ঘুম থেকে জাগাতে পারে না!
আমরা ছিলাম পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি। কেন আমরা এখন সবচেয়ে অসহায় জাতিতে পরিণত হলাম? যে জাতির সামনে রোম এবং পারস্যের মত পরাশক্তি লুটিয়ে পড়েছিল, সে জাতি আজকে কেন গুটিকয়েক অভিশপ্ত ইয়াহুদির হাতে যুগের পর যুগ মার খেয়েই যাচ্ছে? আমরা কি আবার আমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারব? যেতে হলে কী করতে হবে আমাদের? জানতে হলে আপনাকে পড়তে হবে শায়খ আলি তানতাবি রাহ.’র অশ্রুমাখা লেখাগুলো।

বিংশ শতাব্দীর এক সমাজচিন্তক দার্শনিক ড. শায়খ আলী তানতাবী। ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে সিরিয়ার দামেশক নগরীতে তাঁর জন্ম। পৈত্রিক আবাস মিসরের তানতা শহর হওয়ায় তানতাবী নামেই তিনি সমধিক পরিচিত। ছাত্রজীবনেই তুখােড় মেধার কারণে তিনি গবেষক শিক্ষকগণের দৃষ্টি কাড়েন। সেকালে গবেষণা ও জ্ঞানসাধনায় তার পারিবারিক ঐতিহ্য ছিল ঈর্ষণীয়। সেই পরিবারেই তিনি ইসলামি ও সাধারণ শিক্ষার সমন্বিত জ্ঞান অর্জন করে ঐতিহ্যের তিলকে সােনার প্রলেপ আঁটেন। সতেরাে বছর বয়স। থেকেই বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর গবেষণামূলক প্রবন্ধ-নিবন্ধ ও গল্প প্রকাশ হতে থাকে। ১৯৩৬ সালে সাম্রাজ্যবাদীদের জুলুম ও শােষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে তিনি ইরাক গমন করেন। সুদীর্ঘ পাঁচ বছর পর দামেশকে ফিরে এসে বিচারক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে যােগ্যতার সিঁড়ি বেয়ে তিনি প্রধান বিচারপতির আসন অলঙ্কৃত করেন। আর লেখালেখি! সে তাে তার নেশা। এ নেশা তার মজ্জার সাথে মিশা। একটু সময় পেলেই এ চিন্তাবিদ কাগজ কলম হাতে লিখতে বসে যেতেন। তাঁর জ্ঞানের নিগুঢ় চশমায় ধরা পড়ে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঘাপটি মেরে থাকা অসঙ্গতির কালাে পাহাড়। সেই অমানিশা দূর করতে তিনি। জ্বালান নানান রঙের জ্ঞানের মশাল। সেই আলােয় বিদুরিত হয় শত প্রকারের। আঁধার-অজ্ঞানতা; সম্বিৎ ফিরে পায়। হতাশাচ্ছন্ন জাতি। গবেষণামূলক লেখালেখির খ্যাতির মধ্য দিয়ে তিনি মক্কা মােকাররমা শরিয়া কলেজের অধ্যাপক নিযুক্ত হন। বিভিন্ন মিডিয়ায় যুগ-জিজ্ঞাসার সমাধানমূলক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। পাশাপাশি নিয়মিত পত্র-পত্রিকায় কলাম লেখা, বিষয়ভিত্তিক গ্রন্থ প্রণয়ন আর বিভিন্ন মাদরাসা-কলেজে দরসদানও চলতে থাকে সমান গতিতে। ১৯৯৯ সালে ৯০ বছর বয়সে এ শায়খ মক্কা নগরীতে ইন্তেকাল করেন।


বই সম্পর্কে কোন জিজ্ঞাসা বা মতামত থাকলে আমাদেরকে জানান
শেয়ার করুন

লেখকের অন্য বইসমূহ