হ্যাঁ, আমাদের আশেপাশেই তারা আছে। কখনোবা তাদের সঙ্গে চোখাচোখি হয়, কখনোবা আমরা তাদের না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে চলে যাই। এই আমরা যারা ‘ভদ্র’ এবং ‘সুশীল’ জীবনযাপন করি, এই আমরা যারা সমাজের নীতিনির্ধারণকারী এলিট, এই আমাদের চারপাশ ঘিরে তারা ছড়িয়ে থাকলেও তাদের ক্ষিপ্ত এবং বেগবান স্রোতটিকে আমরা দ্রুতবেগে পাশ কাটিয়ে চলে যাই। অথচ একজন ‘ব্যবহৃতা’ আমাদেরই সমাজের মানুষ, আমাদেরই মতো রক্তমাংসে গড়া, কিন্তু তবু তারা এতটাই দূরের যে দূরবিন দিয়েও যেন আমরা তাদের চোখে দেখি না। কারণ সমাজের তৈরি এই দূরবিনও অন্ধকারের জালি দিয়ে তৈরি। যে অন্ধকারের উৎস হলো অবজ্ঞা, ঘৃণা এবং ভয়। আনোয়ারা সৈয়দ হকের এই উপন্যাসটিতে সমাজের অবহেলিত এবং ঘৃণিত মানুষদের জীবনের কথা বলা হয়েছে। তাদের ভালোবাসা, ক্রোধ, নিজেদের ছিনিমিনি জীবন নিয়ে ঠাট্টা, সুশীল সমাজের প্রতি কটাক্ষ এবং অবজ্ঞা তবুও গৃহস্থ জীবনের প্রতি প্রচণ্ড এক আকাক্ষা এবং দীর্ঘশ্বাস সংবেদন মানুষের মন ছুঁয়ে যাবার দাবি রাখে। অশ্রুপ্লাবিত হয়ে ওঠে চোখ। এবং সবশেষে নরনারীর সহজ দাম্পত্য জীবনের মধ্যে সন্দেহের বিষাক্ত ছায়া শকুনের মতো ডানা বিস্তার করে দাঁড়ায়। নারীর উদ্বেলিত হৃদয়ে ডেকে আনে ধ্বংসের ডাক। হৃদয়গ্রাহী এই উপন্যাসটি আনোয়ারা সৈয়দ হকের একটি সমীক্ষা উপন্যাস