”গল্পসমগ্র” বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা:
দাঙ্গা আর দেশভাগের সামনে দাঁড়িয়ে যেমন মনে হয়েছিল তেমনি এই পরাক্রান্ত তাৎক্ষণিক জগতের সামনে দাঁড়িয়ে। উপলব্ধি করা গেল যে ছােট ক্যানভাসে সাহিত্যচর্চা, কবিতা কিংবা খুচরাে প্রবন্ধ আমাকে ধরে রাখতে পারবে না, আমি তাহলে তলিয়ে যাব। গল্পেও আমাকে টানেনি কারণ গল্পেরও ক্যানভাস ছােট। আমি এখন একটা সমৃদ্ধ সমান্তরাল জগৎ চাই যা বছরের পর বছর আমাকে ধরে রাখবে। সচরাচর বাঙালি ঔপন্যাসিকের পরিক্রমা গল্প থেকে উপন্যাসে কিন্তু আমার পরিক্রমা ঠিক উলটো, কবিতা-উপন্যাস থেকে গল্পে। | গল্প সম্পর্কে আমার মধ্যে একটা স্ববিরােধ ছিল। গল্প যেন একশাে মিটার দৌড়। আর আমি চাই নিরবচ্ছিন্ন ম্যারাথন যার আধার উপন্যাস। কিন্তু এই স্ববিরােধের চেহারা ছিল জটিল। কারণ স্কুলের প্রাইজে পাওয়া তিনখণ্ড গল্পগুচ্ছর আমি প্রকাণ্ড ভক্ত; চেকভ আমাকে আলােড়িত করে। যেসব গল্প একটা। চমকপ্রদ ক্লাইমেক্সের মােচড়ে শেষ হয় যেমন মােপাসাঁর গল্প তা আমাকে টানত না। তাছাড়া আমি আরও বড় ক্যানভাসে কাজ করতে চাই, সেখানে বাঙালি মধ্যবিত্তের বহুপরিচিত ছােট্ট হাসি ছােট্ট কান্নার স্থান নেই।