প্রিয় লেখক সেলিনা হোসেনের লেখা ‘অপেক্ষা’ শিশু-কিশোর উপযোগী একটি গল্পের বই। রঙিন আটকার্ডে মুদ্রিত ২৪ পৃষ্ঠার এ বইটি অসাধারণ একটি বই। বইটির প্রকাশকাল অক্টোবর ২০১৮। এ বইয়ে যে গল্পটি রয়েছে সেটি একটি মুক্তিযুদ্ধের গল্প।
রুমা-রুবাকে ঘিরে এই গল্পটি। রুমা-রুবার বাবা মুক্তিযুদ্ধে শহিদ হয়েছেন। তাতে কী! দেশকে স্বাধীন করার জন্য এই ত্যাগ তারা মেনে নিয়েছে। তাদের মা তাদের বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিতেন, ভাত খাওয়াতেন। রুমা-রুবাও তাদের জন্য চাল-ডিম জমিয়ে রাখত, যাতে মুক্তিযোদ্ধারা এলে তাদের খেতে দিতে পারে।
একদিন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে জিজ্ঞেস করে আমাদের যুদ্ধ কী? তখন তারা রুমা-রুবাকে বলে, তোমরা এই যে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার নিয়ে অপেক্ষা করো এটাই তোমাদের যুদ্ধ।
আমাদের স্বাধীনতার পেছনে এ রকম নানা ছোট ছোট গল্প আছে। আসলে এগুলোকে ঠিক গল্প বলা যাবে না। এগুলো বাস্তব ঘটনা। সন্তানকে একটি মুক্ত স্বাধীন দেশ উপহার দিতে হাসিমুখে জীবন দান করেছেন, এমন পিতার সংখ্যা অগণিত। মায়ের কোলে সন্তানের লাশ তবুও মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছেন একটি স্বাধীন দেশের আশায়। আমাদের এ স্বাধীনতার মূল্য অসীম।
বন্ধুরা, তোমরা যারা এখন কিশোর-কিশোরী তারাও একদিন বড় হবে। আর শুধু একাডেমিক বইপত্র পড়েই কেউ প্রকৃত মানুষ হিসেবে তৈরি হয় না। মুক্তিযুদ্ধে বিশাল ইতিহাস কিন্তু এক দিনে জানা সম্ভব নয়। তাই ছড়া, কবিতা, গল্পের মধ্য দিয়ে তোমাদের জানতে হবে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস।
রুমা-রুবার বাবা জসীম মিয়া একদিন বাজার থেকে এসে সবাইকে জানান যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে হবে। জসীম মিয়া শুনেছিলেন বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ। যেখানে তিনি বলেছিলেনÑ
‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’
মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার প্রসঙ্গ এলেই যে নামটি প্রথমে চলে আসে সেটি হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার আপসহীন নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় সমগ্র বাঙালি পাকিস্তানি হানাদারদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কিন্তু কিছু কুলাঙ্গার ছিল যারা স্বদেশ, স্বজাতির সাথে বেইমানি করে পাকিস্তানিদের সাথে যোগ দিয়ে রাজাকার, আলশামস, আলবদর উপাধি ধারণ করে এ দেশের বহু মানুষকে হত্যা করেছে! মুক্তিযোদ্ধারা তাদের রেহাই দেয়নি। তোমরা যারা এখনো বইটি পড়তে পারোনি দ্রæত সংগ্রহ করে পড়ে নাও।