যে জীবন বকপক্ষীর –ফ্ল্যাপে লেখা কথা আমাদের মফস্বল থেকে আধঘন্টার দূরত্বে একটা ঝিল ছিল। বাবা মাঝে মাঝে আমাদের নিয়ে সেখানে ঘুরতে যেতেন। আমি এক হাতে তার একটা আঙুল ধরে হাঁটতাম। বেশি হাঁটতে পারতাম না, ক্লান্ত লাগতো। ঝিলের পাড়ে একটা জায়গায় বাবা আমাকে বসিয়ে দিতেন। বলতেন, “এইখানে চুপ করে বসে থাক। দেখ কী সুন্দর বক!”
আমি বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে থাকতাম। ঝিলের উপর, চারপাশে অসংখ্য বক। ঝিলের পানি সাদা হয়ে যেত, এমন অবস্থা। এতদিন পর আমার আবার সেই বক দেখতে খুব ইচ্ছে হচ্ছে। একটা গোটা ঝিল সাদা করে দেয়া বক। কোনোটা উড়ছে, কোনোটা ঝিলের উপর এক পায়ে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে। কীসের অপেক্ষা? মানবজীবনটা মনে হয় এই বকপাখির জীবনের মতোই! এই জীবন অপেক্ষার! বকপাখি শুধু মাছের জন্য অপেক্ষা করে, কিন্তু এই মানুষের অপেক্ষা কিসের জন্যে? আমার মনে হয়, মানুষ জীবনভর শুধু সুখের সন্ধান করে কাটিয়ে দেয়। যেই সুখের দেখা কেউ পায় আবার কেউ পায় না। তবুও তারা এই বকপক্ষীর মতই অপেক্ষায় তাদের জীবন কাটিয়ে দেয়!