২০১১ সালে ইউএস নেভী সীলস্ এর সবচেয়ে উৎকৃষ্ট মানের কিছু সৈনিক নিয়ে গঠিত একটি দল পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদ শহরের একটি বাড়িতে অতর্কিত হামলা করে ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করে। ওসামাকে গ্রেফতার করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ৯/১১ এর ভয়াবহ ও ধ্বংসাত্বক আক্রমণের আগে থেকেই তদন্ত করে যাচ্ছিল। এই হত্যার সংবাদ তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা’র রাজনৈতিক জীবনে বেশ ভাল ফল বয়ে এনেছিল। এতে তাঁর প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালের প্রথম পর্যায়ে যেমন সাফল্যের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল, তেমনি ঠিক তার পরের বছরেই অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী নির্বাচনে জয়লাভের ক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিল। কিন্তু গোটা বিশ্বের সামনে সে রাতের ঘটনা যেভাবে তুলে ধরা হয়েছিল তার বেশিরভাগটাই ছিল অসম্পূর্ণ গল্প, এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে মিথ্যা গল্পও তুলে ধরা হয়েছিল। বাস্তবে যা ঘটেছিল তার সকল প্রমাণ আজও লুকিয়ে রাখা হয়েছে।
একই সাথে, সিরিয়ার সংঘটিত ‘সিভিল ওয়্যার’ এর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততার ঘটনাও প্রবঞ্চনা ও কূটনৈতিকতার আড়ালে নিপুণভাবে লুকিয়ে রাখা হয়েছে। এটি একটি বিভ্রান্তিকর রাজনৈতিক কার্যনীতি যার কারণে সিরিয়িাতে আইএসআইএস এবং এর পূর্ববর্তী অন্যান্য জঙ্গী সংগঠনগুলোর প্রতি তুরস্কের সমর্থন যোগানোর ঘটনাটিকে হোয়াইট হাউস নির্দ্বিধায় অগ্রাহ্য করে গেছে।
‘লন্ডন রিভিউ অব বুকস্’ এ একটি ধারাবাহিক হিসেবে শুরু হওয়া অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত এই তথ্যগুলো প্রকাশিত হলে গোটা বিশ্ব গণমাধ্যমজুড়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। ওবামার পরবর্তী সময়ে তাঁর কার্যবলীর কোন বিষয়টি তাঁর উত্তরসূরীদের জন্য আদর্শ বা নিদর্শন হয়ে থাকবে, বইটির ‘ভূমিকা’ অংশে সেই উত্তরটিই খুঁজেছেন লেখক হার্শ। ওবামার শাসনামলে কি তার প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী ‘চেঞ্জ উই ক্যান বিলিভ ইন’ (আস্থাশীল পরিবর্তন) পেয়েছিল জনগণ? নাকি এটি ছিল শুধুই মিথ্যা আর আপসে ভরপুর এক শাসনামল যেসময়ে জর্জ ডব্লিউ বুশ এর সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ভ্রান্ত পরিকল্পনাকেই এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল? কী কারণে তিনি আমেরিকার সৈন্যদলের তৎকালীন ক্ষমতাসীন জেনারেলের বিশ্বাস ও আস্থা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছিলেন, যার দরুণ জেনারেল হোয়াইট হাউসের নির্দেশ অমান্য করে কার্যপরিচালনা করেন? এমন আর কী কী আছে যা আমরা জানি না?