হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র মহৎ জীবনীর উপর খুব অল্প পরিসরে কিছু লেখার সুযোগ পেয়ে একজন ক্ষুদ্র লেখক হিসেবে নিজের দায়মুক্তি বোধ করছি। এই বছরে তাঁর শততম জন্মবাষিকী পালিত হবে। এই বিষয়টি আমার কাছে এক অনাহূত আনন্দ-বেদনার কাব্যের মতো। পিতৃহত্যার দায়ভারে আমরা নতজানু, কলঙ্কিত। কাজেই এই মহৎ হৃদয়ের ব্যক্তিটির উপর লেখার আগে আমাকে বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা অনেক সম্মানিত ও গুণিন লেখকের বইপত্র পড়তে হয়েছে। এমনকি বঙ্গবন্ধুর আত্মজীবনীটি বহুবার পড়েছি, আত্মস্থ করেছি। এবং পড়তে হয়েছে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-র সম্পাদিত-লিখিত বইপত্র। কিন্তু কোনো গ্রন্থেই এমন বিশেষ কোনো লেখা বা তথ্য নেই যে, তা পড়ে বোঝা যাবে জীবনদশায় বঙ্গবন্ধু কোনোদিনই ঘটা করে জন্মদিন পালন করেছেন। তিনি সেই ছেলেবেলা থেকেই মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা, ন্যায়-বিচার এবং হাজার বছরের নিপীড়িত-নিষ্পেষিত বাঙালি জাতির মুক্তির বিষয়টি ছাড়া আর অন্য কোনো বিষয় নিয়ে কখনই মাতেন নি, ভাবেন নি। এমনকি ১৯৭১ সালের ১৭ মার্চ, তিনি তখন পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ বিজয়ী দলের নেতা, সেদিনও তিনি বাঙালির মুক্তির দাবিতে সোচ্চার। সন্ধ্যায় জন্মদিন পালনের পরিবর্তে তিনি ইয়াহিয়ার সাথে আলোচনা করছেন প্রেসিডেন্ট ভবনে, তাকে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় পরিষদ আহ্বান করতে সনির্বন্ধ অনুরোধ করছেন। কারণ জান্তার ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের পূর্বভাস পেয়ে তিনি ভারি চিন্তিত, উদ্বিগ্ন। তাই শুধু এটুকু বলতে চাইÑ আমার এই গ্রন্থটি কোনো গল্প-কাহিনি নয়। ‘বাঙালির মুক্তি-সংগ্রামে বঙ্গবন্ধু এক কিংবদন্তির উপাখ্যান’ এই শিরোনামের মধ্যে যে বিষয়টি সবার মনে উদয় হবে, গ্রন্থটির তারই যৎকিঞ্চিৎ প্রতিচ্ছবি। কাজেই আশা করি ১৭ মার্চ, ২০২০ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের মধ্য দিয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা দৃঢ় হোক এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধু’র স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়ন তথা সোনার বাংলা গড়তে শপথ নিই, ঐক্যবদ্ধ হই..।